দেলু মিয়াকে কোনোভাবেই কাজে লাগানো যাচ্ছে না। আবার কাজ না থাকলে বকবক করে মাথা ধরিয়ে ফেলে। চা বানাতে গিয়ে রান্নাঘরের যা অবস্থা করেছে গোছাতে লেগেছে তিন ঘণ্টা। সকালে ভাবলাম বাজারে পাঠাই। দেখি বাজারটা করতে পারে কি না। টুকটাক বাজার করতে পারলে আমার অর্ধেক টেনশন কমে যায়। ছোটখাটো কিছু জিনিস লাগবে। ডাকলাম দেলু মিয়াকে। ডাকার সঙ্গে সঙ্গে হাজির। এখন পর্যন্ত এই একটা গুণ পাওয়া গেছে। একটা কাগজে লিখে দিলাম কি কি লাগবে। হিসাব করে টাকা দিলাম। টাকা হাতে পেয়ে বলল, ‘আপা, আমি সামান্য কিছু কমিশন নিমু। এই ধরেন পাঁচ টেকা, দশ টেকা।’ আমার চোখ কপালে ওঠল! এই ছেলে কমিশনের কী বোঝে? ‘১০০ টাকার কেনাকাটায় ১০ টাকার কমিশন? কমিশন বানান করতে পারিস? কই শিখছিস এইসব?’ ‘কমিশন বইলা না নিলে তো বলবেন, চুরি করছি।’ ভাবলাম, ঠিকই তো। ‘আচ্ছা যা, বাজারটা করে নিয়ে আয়। সব বুঝে ঠিক করে আনতে পারলে তোর কমিশনও ঠিক থাকবে। ভুল করলে কিন্তু হবে না।’ মাথা নেড়ে, খুশিতে দাঁত বের করে দেলু মিয়া বের হলো। আমি কাজে মন দিলাম। কাজ করতে করতে কখন সময় চলে গেল বুঝতে পারিনি। দেড় ঘণ্টা হয়ে গেছে দেলু মিয়ার খবর নেই। তেজপাতা, টিস্যু আর দু-একটা দরকারি জিনিস। পাঁচ মিনিটের বেশি লাগার কথা না। বাসার নিচেই দোকান। এতক্ষণ লাগছে কেন? কিছু হয়ে যায়নি তো? ও তো এখানে নতুন। হারিয়ে যায়নি তো? গেলে কতদূর গেছে? ভারি বিপদ হলো! কেয়ারটেকার চাচাকে ফোন করলাম। বললাম আশপাশে একটু দেখতে। খোঁজখবর না পাওয়া গেলে আমাকে বের হতে হবে। থানায় জিডি করতে হবে। এই ছেলের আত্মীয়স্বজন এসে হাজির হবে। পুলিশ ঝামেলা করবে। মিডিয়া নিউজ করে ফেলবে। সবাই ফোন করে জ্বালাতে থাকবে। ওফ্। আর ভাবতে পারছি না। মাকে ফোন করলাম। দুই মিনিটের মাথায় শুনি বেল বাজছে। দরজা খুলে দেখি দেলু মিয়ার কানটা ধরে কেয়ারটেকার চাচা দাঁড়িয়ে। যাক, হারিয়ে যায়নি। ‘এই লন আফা। বেশিদূর যাওন লাগে নাই। বজলুর দোকানের আশপাশে ঘুরঘুর করতেছিল।’ চাচাকে ধন্যবাদ দিয়ে দেলু মিয়াকে ঘরে ঢোকালাম। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ও হারিয়ে গেলে কি কি বিপদ ঘটত সে সম্পর্কে জ্ঞান দিয়ে ১০ মিনিট ঝাড়লাম। এরপর জিজ্ঞেস করলাম, ‘কী করছিলি এতক্ষণ?’ ‘আপা লিস্টির কাগজটা হারায়া গেছিল।’ ‘তুই এক-দেড় ঘণ্টা ধরে লিস্ট খুঁজেছিস?’ ও মাথা নাড়ল। ‘তোকে তো আমি মুখেও বলে দিয়েছি।’ ‘৫টার মইধ্যে একটা আইটেম ভুইলা গেছি।’ ‘যা মনে আছে তাই নিয়ে আসতি। প্রয়োজনে আবার যেতে পারতি। দোকান তো কাছেই।’ ‘আপা, আপনে বলছেন সব ঠিকঠাক মতো আনতে পারলে কমিশন। এক আইটেম কম হইলে তো আমার কমিশনডা মিস হয়া যাইতো। এই জন্য খুঁজতাছিলাম। লিস্টিটা পাইলেই কমিশন। ফুড়ুত কইরা উইড়া কই যে গেল কাগজটা?’ তাই বলে দেড় ঘণ্টা! কী বলে বোঝাব একে। গালে হাত দিয়ে বসে রইলাম। দেলু মিন মিন করে বলল, ‘আপা, এখন যদি যাইয়া ঠিক কইরা সব নিয়া আসি তাইলে কি কমিশনডা...।
শিরোনাম
- ৫ বলে ৫ উইকেট, ক্রিকেটে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়লেন ক্যাম্ফার
- ৫ বিভাগে ভারী বর্ষণের আভাস, বাড়বে গরমের অনুভূতি
- ব্রয়লার ১৬৫–১৭০, মাছেই স্বস্তি খুঁজছেন ক্রেতারা
- গায়ানাকে গুঁড়িয়ে ৮ রানে জয় রংপুরের
- রাজধানীতে বৃষ্টির সম্ভাবনা, কমতে পারে তাপমাত্রা
- সারা বছর সুস্থ থাকতে নিয়মিত খান এই ৭টি খাবার
- খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা শিশুদের হত্যা করল ইসরায়েলি বাহিনী
- ইরান ভ্রমণে না যেতে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান
- দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন ফের গ্রেপ্তার
- দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ব্যবসায়ী নিহত
- এসএসসিতে ফেল : বরিশালে পাঁচ ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা, দুইজনের মৃত্যু
- এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস না পেয়ে বগুড়ায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
- টানা বৃষ্টির প্রভাব রাজধানীর বাজারে
- এসএসসিতে অকৃতকার্য হওয়ায় গেন্ডারিয়ায় শিক্ষার্থীর 'আত্মহত্যা'
- সেই আলফি পাস করেছে
- এনবিআরের প্রথম সচিব তানজিনা বরখাস্ত
- ফ্যাসিবাদবিরোধীদের ঐক্য অটুট রাখার আহ্বান মামুনুল হকের
- দুদকের মামলায় জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বারকাত গ্রেফতার
- মাকে মারধর করায় যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল স্বজনরা
- ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা খাতে আরও বিনিয়োগে জেলেনস্কির আহ্বান
দেলু মিয়ার কমিশন
আফরীন
প্রিন্ট ভার্সন

টপিক
সর্বশেষ খবর