‘আমাকে কীসের মতো ভালোবাসেন?’ চ্যাটে দিলরুবার এরূপ প্রশ্ন শুনে খলিল নড়েচড়ে বসল। মেয়েদের এইটা একটা বহু পুরনো কৌশল। প্রশ্নের বেশ ইউনিক একটা উত্তর না দিতে পারলে এ যাত্রাতেও তার প্রেম চেষ্টা ভেস্তে যেতে পারে। এর আগে সে ছাপ্পান্ন জন মেয়ের সঙ্গে অনলাইনে প্রেম করার চেষ্টা করেছে। তার পক্ষ থেকে ‘হ্যালো’ বলার পর বিপরীত পাশ থেকে একবারও কোনো রিপ্লাই আসেনি। তার আর প্রেম করা হয়ে ওঠেনি। দিলরুবাই প্রথম খলিলের ‘হ্যালো’র বিপরীতে ‘হাই’ লিখে পাঠিয়েছিল। সেখান থেকেই তার ধ্যানজ্ঞান শুধু দিলরুবা। ইতিমধ্যে দিলরুবার দেওয়া ঠিকানায় সে প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকার উপহার কিনে পাঠিয়েছে। যদিও তাদের সরাসরি দেখা হয়নি। কেবল অনলাইনে চ্যাট হয়েছে। সে বেশ কয়েকবার ভিডিও কল দিতে চাইলেও দিলরুবা রাজি হয়নি, সময় চেয়েছে। দীর্ঘ ছয়মাস পর আজ সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। দিলরুবা চ্যাটে নক দিয়েই বলেছে, খলিল যদি আজ তার একটা প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারে তবে সে ভিডিও কলে আসবে, এমনকি তারা দেখাও করবে। প্রশ্নটি ছিল, খলিল তাকে কার মতো ভালোবাসে। বিভিন্ন সিনেমা নাটকে খলিল দেখেছে এরকম প্রশ্নের উত্তরে নায়ক সাধারণত নুন, মহাআকাশ, গ্রহ, নক্ষত্র, চন্দ্র, সূর্য, নদী, সাগর ইত্যাদি তুলনা দেয়। কিন্তু খলিলের এসব প্রচলিত উদাহরণ দিলে চলবে না। সে এমন কিছু বলবে যা আগে কেউ বলেনি। সেই মোতাবেক সে পূর্ব প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিল। আজ দিলরুবার প্রশ্নের উত্তরে সে ঝটপট লিখে দিল, ‘আমি তোমাকে ইন্টারনেটের মতো ভালোবাসি। ইন্টারনেট ছাড়া যেমন এক মুহূর্তও টিকে থাকা সম্ভব নয়, তেমনি তোমাকে ছাড়া আমিও এক মুহূর্ত টিকে থাকতে পারব না।’ উত্তর দেখে দিলরুবা সঙ্গে সঙ্গে লিখল, ‘সত্যি?’ খলিল টাইপ করল, ‘সত্যি সত্যি সত্যি, তিন সত্যি।’ লিখে সে সেন্ড বাটনে ক্লিক করবার আগেই বাসার ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হয়ে গেল। খলিলের মাথায় হাত। সে দৌড়ে কয়েকবার রাউটার অন অফ করল। ইন্টারনেট ফিরে এলো না। একনাগাড়ে সে ইন্টারনেট অফিসে ফোনকল দেওয়া শুরু করল। কেউ ফোন রিসিভ করল না। এভাবে কেটে গেল দীর্ঘক্ষণ। খলিলের মুখ শুকিয়ে গেছে। বহু কষ্টে সাতান্ন নাম্বার চেষ্টায় সে দিলরুবার মন জয় করতে শুরু করেছিল, মেসেজটা পাঠাতে পারলেই ঘটনাটা ঘটে যেত। কিন্তু ইন্টারনেট চলে গিয়ে তার সেই প্রেমের সম্ভাবনা মাঠে মারা যেতে বসেছে। এরই মধ্যে সে আরও হাজার খানেকবার রাউটার অফ অন করল। তবুও ইন্টারনেট ফিরে এলো না। দীর্ঘ দুই ঘণ্টা বিয়াল্লিশ মিনিট পর ফিরে এলো ইন্টারনেট। যান্ত্রিক গোলযোগ কেটেছে। খলিল ভয়ে ভয়ে লিখল, ‘আছ?’ ওপাশে উত্তর নেই। সে আবারও লিখল, ‘জান, শুনছ?’ উত্তর নেই। খলিলের হৃৎস্পন্দন দ্রুত উঠানামা শুরু করল। বুকে চিনচিনে ব্যথা। হঠাৎ সে শুনল চ্যাটবক্সে নতুন মেসেজ আসার শব্দ। দিলরুবার মেসেজ দিয়েছে। সে লিখেছে, ‘কি ইন্টারনেট চলে গিয়েছিল? আপনি তো ইন্টারনেট ছাড়া এক মুহূর্তও বেঁচে থাকতে পারেন না, এখন বেঁচে আছেন তো?’ এরপর দিলরুবার একটা বত্রিশ দাঁত বের করা স্মাইলি ইমুজি। এরপর ব্লক। এটা কী হলো? খলিল মনে মনে অর্ধলক্ষ টাকার হিসাব কষা শুরু করল। হিসাব করতে গিয়ে এসি রুমেও সে ঘামতে লাগল।
শিরোনাম
- আমরা জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র আদায় করে ছাড়ব : নাহিদ
- বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের দাবি ইসলামপন্থীদের ঐক্য : মাসুদ সাঈদী
- চীনকে উড়িয়ে টানা তৃতীয় জয়ে শীর্ষে বাংলাদেশ
- নান্দাইলে বজ্রপাতে পিতা-পুত্রের করুণ মৃত্যু
- বিএনপি নির্বাচিত হলে প্রতিটি ঘরে ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হবে : টুকু
- রাজনীতি হবে দেশের স্বার্থে, জনমানুষের স্বার্থে : আখতার হোসেন
- বন্ধুত্ব থেকে প্রেমের সফল পরিণতি
- ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
- ইরানে আফগানদের গণবহিষ্কার, ছাড়তে না পারলে গ্রেফতার
- ভেজাল টক দই যেভাবে চিনবেন
- গাজায় চলছে যুদ্ধ, তেলআবিবে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ
- হাসারাঙ্গার বিশ্বরেকর্ড
- হাসিনাসহ ১০০ জনকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশ
- চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ
- জলমহালের একমাত্র অধিকার প্রকৃত মৎস্যজীবীদের: ফরিদা আখতার
- ১০ম গ্রেডে উন্নীত হচ্ছেন প্রাথমিকের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষক
- ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ৩১৭ জন হাসপাতালে ভর্তি
- দেশে ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের করোনা শনাক্ত
- ধর্ষণের শিকার হয়ে বিষ পান করা সেই কিশোরীকে বাঁচানো গেল না
- আমরা আশা করি একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব : সালাহউদ্দিন
অক্সিজেনের বিকল্প
রাফিউজ্জামান সিফাত
প্রিন্ট ভার্সন

টপিক
সর্বশেষ খবর