‘রূপ দেখে বলব কী, ভাষা খুঁজে পাই না...’। জি, রূপ দেখে ভাষা হারিয়ে ফেলার যে মধুর জটিলতা, এই জটিলতাটা আগে ছিল। আর বর্তমান জটিলতা হচ্ছে, জিনিসপত্রের দাম দেখে আমরা ভাষা হারিয়ে ফেলেছি বা ফেলছি। মাঝে মধ্যে তো অবস্থা এমন হচ্ছে, একেবারে হার্টঅ্যাটাকের পর্যায়ে চলে যাচ্ছি। মুরগির দামের কথাই ধরুন। এই জিনিসের দাম শোনার পর কি স্বাভাবিক থাকা যায়? স্বাভাবিক থাকা যায় কি না এ বিষয়ে আমার এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে আলাপচারিতার অংশবিশেষ। গতকাল এই বড় ভাই বললেন, কদিন ধরেই তোর ভাবি চাপ দিচ্ছিল ডাক্তারের কাছে যেন যাই। কারণ, বুকে একটু একটু ব্যথা হচ্ছিল। তার ধারণা, আমার হার্টে সমস্যা আছে। একই ধারণা আমারও ছিল। কিন্তু মুরগি কিনতে গিয়ে মনে হলো, হার্টে সমস্যা সংক্রান্ত যে ধারণাটা আমি করেছিলাম বা তোর ভাবি করেছিল, সেটা অবান্তর। আরে মুরগির কেজি ৩০০ টাকার কাছাকাছি; এটা শোনার পরও আমি স্বাভাবিক থাকতে পেরেছি, হার্টঅ্যাটাক হয়নি, তাহলে কি শতভাগ নিশ্চিত থাকতে পারি না আমার হার্ট শতভাগ সুস্থ আছে? আমার এক প্রতিবেশী বললেন, আগে আমি যখন বাজারে যেতাম, সঙ্গে একজনকে নিয়ে যেতাম। যে কি না আমার ব্যাগটা বহন করত। আমি প্রচুর সদাইপাতি কিনতাম তো! ব্যাগটা খুব ভারী হয়ে যেত। এ জন্য সহযোগী লাগত। তবে হ্যাঁ, এখনো কিন্তু একজনকে সঙ্গে নিয়েই বাজারে যাই। আমি বললাম, এখন সেভাবে জিনিসপত্র কেনা হয় না। ব্যাগও ভারী হয় না। তবু সঙ্গে লোক নিয়ে যেতে হয়? প্রতিবেশী বললেন, এখন ব্যাগ টানার জন্য লোক নিই না। লোক নিই আমাকে টানার জন্য। আসলে দাম শুনে অচেতন হয়ে যাওয়ার একটা শঙ্কা থাকে তো! চোখে-মুখে পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফিরিয়ে আনার জন্য একটা লোক সঙ্গে থাকা কিন্তু জরুরি।