কোনো জনপ্রতিনিধি বা বিত্তশালী না হয়েও প্রায় এক যুগ ধরে ভাঙাচোরা রাস্তা মেরামত করে সবার নজরে আসেন দরিদ্র ভ্যানচালক মিস্টার আলী। ভ্যান চালিয়ে সামান্য আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেলেও সেই টাকা থেকে এমনকি বাড়ির আসবাবপত্র বিক্রি করে, বাড়ি মেরামতে ঋণের টাকা উঠিয়ে সেই টাকা দিয়ে এলাকার চলাচলের অযোগ্য রাস্তা মেরামত করেন দরিদ্র এই মানুষটি। কিন্তু তার এই কাজ ভালো চোখে দেখছেন না স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধি। তারা মিস্টার আলীকে আধপাগলা আখ্যা দিতেও ছাড়ছেন না। জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের পোড়াডিহি গ্রামের মৃত সাজেমান হকের ছেলে দিনমজুর ও ভ্যানচালক মিস্টার আলী (৬০)। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার এলাকার কোনো মানুষ যেন রাস্তাঘাটে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার না হয়। ভালোভাবে গন্তব্যে পৌঁছতে পারে সেজন্য আমি ১০-১২ বছর ধরে নিজের উপার্জিত অর্থ দিয়ে এলাকার ভাঙা রাস্তা মেরামত করি। যতদিন বাঁচব ততদিনই আমি জনকল্যাণমূলক এ কাজ করে যাব। গত বুধবার সকালে মনাকষা ইউনিয়নের খড়িয়াল চৌকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা মেরামতের সময় তার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি জানান, আমি জনগণের কল্যাণে মনাকষা ইউনিয়নের গোপালপুর, কুঠিরঘাট, পারচৌকা, রানীনগর, হাঙ্গামী, হাউসনগর, মনাকষা, বিনোদপুর ইউনিয়নের ক্যাপড়াটোলা, কালিগঞ্জ, বিশ্বনাথপুর, শ্যামপুর ইউনিয়নের চামাবাজার ছাড়াও দুর্লভপুর ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে ভাঙা রাস্তা মেরামত করে যাতায়াতে জনগণের ভোগান্তির শিকার হতে রক্ষা করেছি। তবে এ কাজের জন্য আমি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা পয়সা নিইনি। সারা দিন ভ্যান চালিয়ে যা উপার্জন করি, তা থেকে সামান্য কিছু সংসারে খরচ করি এবং বাকি টাকা সঞ্চয় করে কয়েকদিনের জমানো টাকা দিয়ে ইট, বালু ও সিমেন্ট কিনে রাস্তা মেরামত করি। এভাবেই আমি রাস্তা মেরামতের কাজ করি। এতে আমি খুব আনন্দ পাই, কারণ আমার এ কাজের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। এদিকে মনাকষা ইউনিয়নের এক গৃহবধূ বলেন, মিস্টার আলী অত্যন্ত গরিব মানুষ হলেও প্রায় ১০-১২ বছর ধরে তিনি ভ্যান চালিয়ে উপার্জিত টাকা সংসারে খরচ না করে জনকল্যাণে রাস্তা মেরামত করেন। আমাদের বাড়ির সামনে রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল। কিন্তু মিস্টার আলী সেটি মেরামত করে যাতায়াতের উপযোগী করে জনভোগান্তি দূর করেন। এ প্রসঙ্গে মিস্টার আলীর স্ত্রী শাহাজাদী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অভাবের সংসারে আমার স্বামী ভ্যান চালিয়ে যা উপার্জন করে তার সবই রাস্তা মেরামতের কাজে খরচ করেন। মিস্টার আলীর পুত্রবধূ হাসিনা বেগম জানান, আমার শ্বশুর কিস্তির টাকায় বাড়ির জন্য কেনা ইট, বালু সিমেন্ট, এমনকি বাড়ির এক দিকের ওয়াল ভেঙে সে ইটগুলো নিয়ে রাস্তা মেরামত করেছেন। যে জন্য আমাদের বাড়ির কাজ বন্ধ আছে। মিস্টার আলীর প্রতিবেশীরা তার এই কাজে গর্ববোধ করে বলেন, এলাকার উন্নয়নে জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন হলেও তারা দূরে থাকেন আরও মিস্টার আলী এলাকার ভাঙাচোরা রাস্তা মেরামতে তার কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করেন- যা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
শিরোনাম
- গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে : তৃপ্তি
- দাবি না মানলে ১১ নভেম্বর কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেবে আট দল
- ইস্তাম্বুলে শান্তি আলোচনা ব্যর্থ, দায়ী পাকিস্তান: তালেবান
- ইলেকশন অবজারভার সোসাইটির আত্মপ্রকাশ
- আওয়ামী লীগের আমলেই দেশের সংখ্যালঘুরা বারবার নির্যাতিত হয়েছে : দুলু
- কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয় : তারেক রহমান
- বগুড়া পৌরসভার উন্মুক্ত ড্রেন যেন মৃত্যু ফাঁদ
- রাজবাড়ীতে উদীচীর ৫৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত
- টাঙ্গাইল আদালত চত্বরে বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রামাগার উদ্বোধন
- অনির্দিষ্টকালের জন্য পাঠদান বন্ধের ঘোষণা শিক্ষকদের
- ‘বাকসু’ বিএম কলেজের, দাবি সাবেক ছাত্র নেতাদের
- শাহবাগে শিক্ষকদের ওপর জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড, যে ব্যাখ্যা ডিএমপি'র
- ডিসেম্বরের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে : সালাহউদ্দিন
- কুলাউড়ায় বসুন্ধরা শুভসংঘের সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দের উদ্বোধন
- গাজীপুরে কাভার্ডভ্যান চাপায় যুবক নিহত
- উন্নয়ন ভাবনা নিয়ে ‘তারুণ্যের চোখে ডোমার’ সেমিনার অনুষ্ঠিত
- জি-মেইল হ্যাক করে ব্যাংক হিসাব থেকে ১৭ লাখ টাকা স্থানান্তর, গ্রেপ্তার ২
- মাদারীপুরের ডাসারে সেলুনে বই পড়ার নতুন উদ্যোগ
- বুয়েটের অপূর্বের নেতৃত্বে ‘নিউরাল নিনজাস’ দলের আন্তর্জাতিক সাফল্য
- ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী নৈরাজ্য সৃষ্টির করলে জনগণই প্রতিরোধ করবে : আইজিপি
এক যুগ ধরে নিজের টাকায় রাস্তা মেরামত
ভ্যানচালক মিস্টার আলীর অনন্য নজির
মো. রফিকুল আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রিন্ট ভার্সন
ঋণের টাকা উঠিয়ে সেই টাকা দিয়ে এলাকার চলাচল অযোগ্য রাস্তা মেরামত করেন দরিদ্র এই মানুষটি
এই বিভাগের আরও খবর