সংশয় ছিল এক সময়। এখন আর নেই। এক সময় মনে হয়েছিল নিরাপত্তার অজুহাতে সিরিজটাই ভেস্তে যাচ্ছে। এখন সেটা অতীত। সব শঙ্কা, সংশয়কে দূর করে ইংল্যান্ড আসছে এবং দুই টেস্ট ও তিন ওয়ানডের পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ সফরে। ইংলিশ ক্রিকেটারদের পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত বাংলাদেশ সরকার ও বিসিবি। মাশরাফি, মুশফিক থেকে শুরু করে যখন দেশের ১৬ কোটি ক্রিকেটপ্রেমী ক্ষণ গুনছে ইংল্যান্ড দলের, তখনই শোনা যাচ্ছে ইংলিশ ওয়ানডে ও টি-২০ অধিনায়ক ইউয়ান মরগান আসছেন না সফরে। যদিও ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ড বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। তারপরও ব্রিটিশ মিডিয়ার খবর— মরগান যাচ্ছেন না বাংলাদেশে। তার জায়গায় ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেবেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জস বাটলার। মরগানের না আসার সিদ্ধান্তে ব্যাপক ক্ষেপেছে ইংলিশ মিডিয়া। প্রভাবশালী ডেইলি মেইল লিখেছে, ‘বাংলাদেশ সফর থেকে সরে দাঁড়িয়ে ইংল্যান্ডকে ডোবাচ্ছেন মরগান। একই সঙ্গে নিজের ক্যারিয়ারকেও ঝুঁকিতে ফেলছেন।’
মরগান আসবেন না অফিশিয়ালি জানা না গেলেও গতকাল সাবেক অধিনায়ক ও ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মরগান। পাকিস্তানের সঙ্গে সর্বশেষ টি-২০ ম্যাচেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মরগান। অবশ্য আগেই জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ সফর করতে নাও পারেন। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী সহিংসতায় তিনি ভীত। মরগানের সঙ্গে আসতে নাও পারেন অলরাউন্ডার স্টুয়ার্ট ব্রড। তবে ‘সুইং মাস্টার’ জেমস অ্যান্ডারসন আসবেন বলে আগেই জানিয়েছেন। স্পিনিং অলরাউন্ডার মঈন আলিও আসবেন বলেছেন। কে আসবেন আর না আসবেন— এ নিয়ে বসে নেই বিসিবি। তবে চাইছে পূর্ণ শক্তির ইংল্যান্ডকে।
মরগান যদি না আসেন, তাহলে নেতৃত্ব হারাতে পারেন। ভারত সফরে বিবেচনায় নাও আসতে পারেন। নেতৃত্ব হারানোর শঙ্কা দেখছেন সাবেক অধিনায়ক, বর্তমানে ধারাভাষ্যকার ও কলামিস্ট নাসির হোসেন গার্ডিয়ান পত্রিকায় লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ সফরে না আসলে মরগান নেতৃত্ব হারাতে পারেন।’ আরেকজন সাবেক ইংলিশ পেসার ও ক্রিকেট সাংবাদিক ডেরেক প্রিঙ্গল টুইটারে লিখেছেন, ‘ভারত সফরে বোমা হামলার স্মৃতির কথা বলে বাংলাদেশ সফর থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন মরগান। অথচ তিনি কিন্তু ভারত সফর থেকে সরে দাঁড়াননি।’ সাবেক ক্রিকেটারদের সবাই চাইছেন সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিক মরগান। কিন্তু নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সরে দাঁড়াতে চাইছেন তিনি।
ডেইলি মেইল চরম সমালোচনা করেছে মরগানের। পত্রিকাটি প্রশ্ন তুলেছে মরগানের নেতৃত্ব নিয়ে, ‘তরুণ সতীর্থদের যখন তাদের অধিনায়ককে সবচেয়ে বেশি দরকার, চরম অনিশ্চয়তায় তারা যখন চাইছিল অধিনায়ক সঙ্গে থেকে সবাইকে নিয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর বিমানে উঠবেন, সে সময় মরগান কি-না নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। মরগান এটা কীভাবে করলেন? সেকি ভুলে গেছেন যখন টানা ২১ ম্যাচে কোনো ফিফটি ছিল না, তখন তার ওপর আস্থা রেখেছিলেন নির্বাচকরা।’
মরগান কিংবা অন্য কেউ আসুক, না আসুক, বাংলাদেশ সফরে শক্তিশালী দলই পাঠাচ্ছে ইংল্যান্ড।