সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় স্থানীয় ফুটবলারদের নাম খুঁজে পাওয়াই যায় না। পেশাদার ফুটবল লিগ শুরু হওয়ার পর একবারই স্থানীয় ফুটবলার সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন। ২০০৯ সালে ঢাকা আবাহনীর এনামুল হক ২১ গোল দিয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। এরপর শুধু বিদেশিদের রাজত্ব। সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়া দূরের কথা, শীর্ষ ১০-এও স্থানীয়দের জায়গা হতো না। বিদেশি ফুটবলারদের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়াটা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। অথচ স্বাধীনতার পর এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড মোহামেডানের সালাম মুর্শেদীর। ১৯৮২ সালে তিনি প্রথম বিভাগ লিগে ২৭ গোল করেন। সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়াটা স্থানীয়দের স্বপ্ন হলেও সত্তর ও আশির দশকে তা ছিল রেকর্ডে ভরপুর।
শেষ হওয়া বসুন্ধরা গ্রুপ পেশাদার লিগে কিছুটা হলেও ব্যতিক্রম লক্ষ করা যাচ্ছে। ১৯ গোল করে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন মোহামেডানের মালির সুলেমান দিয়াবাতে ও রহমতগঞ্জের ঘানার স্যামুয়েল বোয়াটেং। স্তস্তির খবর হচ্ছে, এবার শীর্ষ ১০-এর তালিকায় স্থানীয় ফুটবলাররাও ঠাঁই পেয়েছেন। বসুন্ধরা কিংসের রাকিব হোসেন তো রীতিমতো চমক দেখিয়েছেন। শুরুর দিকে না ছিল নজরকাড়া পারফরম্যান্স ও গোল, কিন্তু দ্বিতীয় লেগে এসেই ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। ১ হ্যাটট্রিকসহ ১১ গোলে যৌথভাবে সর্বোচ্চ তৃতীয় গোলদাতা হয়ে হয়ে ওঠেন তিনি। লোকালদের মধ্যে তিনিই হিরো হয়ে গেলেন। সামনে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ। এমন পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে তাঁকে আলাদাভাবে উজ্জীবিত করবে। সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় পুলিশ এফসির আল-আমিনের অবস্থান ৫-এ। ২১ বছর বয়সি এ তরুণের গোলসংখ্যা ১০। তাঁর পারফরম্যান্সও নজরকাড়া। বসুন্ধরা কিংসের ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের ৬ গোলে অবস্থান ৮। ফর্টিস এফসির পিয়াস আহমেদ নোভাও ৬ গোল করেন। শীর্ষ গোলদাতার তালিকায় যেখানে স্থানীয়দের খুঁজেই পাওয়া যেত না, সেখানে কি না এবার সেরা ১০-এ চারজনই বাংলাদেশি। এনামুল ইসলাম ও নাবিব নেওয়াজ জীবন এবার ৫ গোল করে যৌথভাবে ১৩তম অবস্থানে। জীবনকে নিয়ে ধারণা ছিল তাঁর ফর্ম নেই। এজন্য আবাহনী তাঁকে ছেড়েই দিয়েছিল। রহমতগঞ্জে এসে জীবন নতুন জীবন ফিরে পেলেন। তাজ উদ্দিন, সৌরভ দেওয়ান, দীপক রায়, শেখ মোরসালিন ও মজিবুর রহমান জনিও আছেন সেরা ২০-এ। শীর্ষ ২০-এর মধ্যে ১১ জনই বাংলাদেশের। এ তো আনন্দের।