মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিশুরাও লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কিংবা হালের সেনসেশন নেইমার হতে চায়। সুবিধা বঞ্চিত হাজার হাজার রোহিঙ্গা শিশু-কিশোরদের ফুটবল মাঠে ফেরাতে এগিয়ে আসছে এশিয়ান ফুটবল কাউন্সিল(এএফসি) ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কিন্তু বাধা ফুটবল খেলার প্রধান অনুসঙ্গ মাঠ।
মঙ্গলবার এশিয়ান ফুটবল কাউন্সিল(এএফসি) ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এর একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল উখিয়ার কুতুপালং ম্যাকশিফ্ট সেটেলমেন্ট ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। প্রতিনিধি দলটির সদস্যরা এসময় রোহিঙ্গা শিশুদের ফুটবলের প্রবল আগ্রহের কথা খুবই মনোযোগ দিয়ে শুনেন। রোহিঙ্গা শিশু কালাম, আনিস ও ওসমানসহ উপস্থিত প্রায় শতাধিক শিশু থেকে জানতে চাওয়া হয় তারা ফুটবল খেলতে ভালবাসে কিনা। উত্তরে তারা বলে, তারা সবাই এক সময় তাদের দেশ মিয়ানমারের খোলা মাঠে ফুটবল খেলতো। জীবন বাঁচার তাগিদে বাংলাদেশ পালিয়ে এসে ফুটবলে লাথি মারার জিনিসটি ভুলতে বসেছে। সুযোগ পেলে তারা প্রতিদিন ফুটবল খেলবে। তারাও মেসি, রোনালদো ও নেইমারের মত বিশ্বসেরা তারকা ফুটবলার হতে চায়।
পরিদর্শন শেষে তাৎক্ষণিক এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এএফসি প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ডেভিড মাইকেল বুরজা বলেন, ফুটবল হচ্ছে একটি বিশাল শক্তি। ফুটবলের সাইড ভিউ থেকে সুবিধাবঞ্চিত রোহিঙ্গা শিশুদের মাঝে ফুটবল ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি এডুকেশন ও হেলদি লাইফ নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী এএফসি। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ও কক্সবাজার জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনকে সাথে পাবো বলে আশা করছি।
পরিদর্শক দলের সদস্য এএফসি সোশ্যাল রেসপনসেবিলিটির প্রধান ডা. আনাতোলি রঙ্গনাথন বলেন, স্পোর্টস মানবিকতাকে পাশ কাটতে পারে না। এশিয়ার ৪৭টি দেশের সংগঠন এএফসি রোহিঙ্গা শিশু-কিশোরদের ফুটবলের সুবিধা দিতে চায়। তাদের মাঝে ফুটবল, জার্সি, ফিড দেয়ার কথা ভাবছে এএফসি। বিষয়টি নিয়ে আমরা ইউএনএইচসিআর ও রেডক্রস এর মত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাব।
বাফুফে জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবু নাঈম সোহাগ বলেন, এএফসির মানবিক প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে আমরা সাইড ভিজিট করবো। তারপর কঠিন কাজটি কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সে লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করবো। আশা করি জনপ্রিয় ফুটবলের শক্তির জায়গা থেকে আমরা রোহিঙ্গা শিশু-কিশোদের মুখে হাসি ফুটাতে পারবো। পাশাপাশি রোহিঙ্গা চাপে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় কমিউনিটির সুবিধা নিয়েও আমরা যৌথভাবে কাজ করতে নীতিগত সম্মত হয়েছি।
প্রতিনিধি দলে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বাফুফে সদস্য বিজন বড়ুয়া, কক্সবাজার জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদী, সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন শাহীন, কোষাধ্যক্ষ ফরহাদুজ্জামান ফরহাদ ও এনজিও সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং রেডক্রসের প্রতিনিধিবৃন্দ।
এর আগে সকাল ৯টায় প্রতিনিধি দলটির সদস্যরা বিশেষ বিমানযোগে কক্সাবাজার বিমান বন্দরে উপস্থিত হন। পরে সড়ক পথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান। বিকাল সাড়ে ৪টা বিমানযোগে প্রতিনিধি দলটি ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার ত্যাগ করেন।
বিডি-প্রতিদিন/০৮ মে, ২০১৮/মাহবুব