মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

তিন চাকার দখলে রাজশাহী

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

তিন চাকার দখলে রাজশাহী

জেব্রা ক্রসিং আছে। কিন্তু রাস্তা পার হওয়ার কোনো উপায় নেই। নেই কোনো ট্রাফিক সিগন্যালও। প্রয়োজনে সামনে এগোবার বা ডানে-বাঁয়ে যাওয়ার উপায় নেই। প্রতিদিন নগরীতে যানজটের এ অবস্থা দেখলে মনে হবে দেখার কেউ নেই। অনিয়ন্ত্রিত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক যেন নগরবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নগরীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে স্বল্প ভাড়ায় দ্রুত যাতায়াতের সুবিধার কারণে নগরবাসী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক ব্যবহার করে। কিন্তু এসব বাহনের চালক সড়কে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করায় নগরকেন্দ্রে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হয় সীমাহীন যানজট। প্রতিদিনের যানজটের দুর্ভোগ এখন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী। নগরীর উপকণ্ঠ কাঁটাখালী থেকে কাশিয়াডাঙ্গা। প্রায় সাড়ে ১৬ কিলোমিটার রাস্তা। এই সড়কে দেখা মিলবে রাস্তা দখল করে যাত্রী ওঠা-নামার দৃশ্য। এতে বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। এসব গাড়ির চালকরা জানান, ছোট গাড়ির কারণে অসুবিধায় পড়তে হয়। যাত্রী ওঠানামার সময় তারা রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। এজন্য অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। তখন দায় আমাদের ওপর এসে পড়ে। সরেজমিন দেখা যায়, নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা, হড়গ্রামবাজার, কোর্ট, কোর্ট স্টেশন, সিঅ্যান্ডবি, লক্ষ্মীপুর মোড়, সিটি বাইপাস, বর্ণালীর মোড়, রেলগেট, স্টেশন, শালবাগান, নওদাপাড়া, ভদ্রা, তালাইমারী, কাজলা, বিনোদপুর, সাহেববাজার এলাকায় তিনচাকার যানে ভিড়। অনেকের অভিযোগ, তারা কোনো কিছুর নিয়ম না মেনেই যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে লোক ওঠানামা করায়। এতে পেছন থেকে দ্রুতগতির গাড়ি এলে দুর্ঘটনাও ঘটে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক শামসুল ইসলাম জানান, দিন শেষে মালিককে জমার টাকা দিতে হয়। এখন সারা দিন অটো চালিয়েও এই টাকা জোগাড় করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। করোনায় যাত্রী কমে গেছে। তাই রাস্তায় লোক ডেকে ডেকে তুলতে হয়। রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, অটোরিকশার কোনো হিসাব নেই। যেখান-সেখান থেকে দুই-তিনটা যাত্রী নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ছে। মনে হচ্ছে, যাত্রীর চেয়ে অটোরিকশার সংখ্যাই বেশি। এসব অটোরিকশা চালকের কোনো প্রশিক্ষণ নেই। গাড়ি চালানোর দক্ষতাও নেই। মাঝেমধ্যে অটোরিকশা দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে তারা আর্থিক ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নূর-ঈ-সাইদ জানান, সিটি করপোরেশন ১০ হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর মধ্যে প্রায় সাত হাজার ৭৫০টি অটোরিকশাকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। এখনো ২ হাজার ৫০০টির নিবন্ধন বাকি আছে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক মোফাখখারুল ইসলাম জানান, এখন করোনা পরিস্থিতির কারণে একসঙ্গে লাল ও সবুজ দুই রঙের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলছে। বিষয়টি আমরা সিটি করপোরেশনকে জানিয়েছি। তারা এখনো সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি। তারা সিদ্ধান্ত জানালে নগরীতে আবারও শিফট করে দুই রঙের অটোরিকশা চলাচল শুরু করবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর