চুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহ জালাল মিশুক বলেন, বারবার নালা-নর্দমা ও ড্রেনে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। চসিককে বিষয়টির স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
চট্টগ্রামে উন্মুক্ত নালা-নর্দমা ও ড্রেন ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। গত আট বছরে চট্টগ্রাম নগরে অন্তত ১৮ জন মানুষ নিরাপত্তা বেষ্টনী ও স্ল্যাববিহীন উন্মুক্ত নালা-নর্দমায় পড়ে মারা গেছেন। গত ৮ জুলাই নগরের হালিশহর নয়াবাজার আনন্দিপুর জামে মসজিদের সামনের নালায় পড়ে হুমায়রা আক্তার নামের তিন বছর বয়সি এক শিশু মারা গেছে।
জানা যায়, গত ৮ জুলাই নগরের কাপাসগোলা এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হিজড়া খালে পড়ে মারা যায় ছয় মাস বয়সি শিশু সেহরিস। এ ঘটনার পর চসিক নগরের উন্মুক্ত খাল-নালার সংখ্যা চিহ্নিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। পরে চসিক ৪১ ওয়ার্ডের ৬টি জোনে মোট ৫৬৩টি জায়গাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে। এর মধ্যে ১ নম্বর জোনে ৪৭টি, ২ নম্বর জোনে ৭৮টি, ৩ নম্বর জোনে ৬৮টি, ৪ নম্বর জোনে ৭৪টি, ৫ নম্বর জোনে ৩৩টি এবং ৬ নম্বর জোনের ২৬৩টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে। চসিক তালিকা অনুযায়ী দুর্ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পরিমাপের ৮৬৩টি স্ল্যাব বসানোর উদ্যোগ নেয়। এরপর তালিকা মতে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে দেওয়া হয় বাঁশের ঘেরাও এবং বসানো হয় স্ল্যাব। কিন্তু চসিকের এ সমাধান ফলপ্রসূ হয়নি। এরই মধ্যে অনেক স্থানের বাঁশ পচে গেছে। বর্তমানে নগরে ৫৭টি খাল এবং ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার নালা আছে।
হালিশহরের স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদুর রহমান শাওন বলেন, গত প্রায় এক দশকে নগরের খাল-নালায় পড়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু চসিক এখনো বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে বলে মনে হয় না। ফলে একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। একটি সভ্য, বাণিজ্যিক রাজধানী এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরে এমন ঘটনা মানা যায় না। আমরা আর কোনো প্রাণহানি চাই না। লোক দেখানো বা অস্থায়ী সমাধান নয়, কার্যকর ও স্থায়ী উদ্যোগ চাই।
চুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহ জালাল মিশুক বলেন, বারবার নালা-নর্দমা ও ড্রেনে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। চসিককে বিষয়টির স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। দরকার হলে নিয়মিত তদারকির জন্য চসিকের প্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দার সমন্বয়ে মনিটরিং টিম গঠন করতে হবে। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কোনো মৃত্যুই আমাদের কাম্য নয়। নালায় পড়ে প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনাই দুঃখজনক। ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বাঁশের বেড়া ও স্ল্যাব বসানো হয়েছিল। এ ব্যাপারে আমরা আবারও নতুন করে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করব।