মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নতুন উদ্যোগ

অপরিকল্পিত উন্নয়নে নগরবাসীর দুর্ভোগ কমছে না। নগর উন্নয়ন সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় থাকলে এর সুফল পাওয়া যেত অনেক আগেই

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নতুন উদ্যোগ

বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ক্রমবর্ধমান যানজট ও বিশৃঙ্খলার নগরী হয়ে উঠেছে। রাস্তায় বেরুলেই দুর্ভোগ সঙ্গী করে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। অরক্ষিত ফুটপাথগুলো ভ্রাম্যমাণ দোকানীদের দখলে। সড়কজুড়ে অযান্ত্রিক রিকশা, ভ্যান ও অবৈধ যানের ছড়াছড়ি। ধীরে ধীরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশাপাশি অলি-গলিতেও বেড়ে যাচ্ছে অবৈধসহ বিভিন্ন যানবাহন। ফুটপাথ দখল করে যেমন কাঁচাবাজার বসছে, তেমনি রাস্তার ওপর ভ্যান, মোটরচালিত রিকশা ও বিভিন্ন গাড়ি রেখে যানজটের সৃষ্টি করছে প্রতিনিয়তই। এসব সমস্যা সমাধানে বা নগরীর যানজটমুক্তসহ শৃঙ্খলা ফেরাতে ইতিমধ্যে চসিকের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. মোবারক আলী একটি কর্ম-পরিকল্পনার প্রস্তাবনা দিয়েছেন চসিক মেয়র বরাবর। এসব কর্ম-পরিকল্পনা নিয়ে ট্রাফিক বিভাগসহ চসিকের শীর্ষ দায়িত্বশীলরা আগামী সপ্তাহে বৈঠক করবেন। প্রস্তাবনাসহ নানামুখী আরও কিছু উদ্যোগ নিলে সহসাই চট্টগ্রাম সুন্দর ও পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, চট্টগ্রাম নগরী নিয়ে সমন্বিত কোনো পরিকল্পনা নেই। অপরিকল্পিত উন্নয়নে নগরবাসীর দুর্ভোগ কমছে না। নগর উন্নয়ন সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় থাকলে এর সুফল পাওয়া যেত অনেক আগেই।

চসিকের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মোবারক আলীর দেওয়া প্রস্তাবনায় সিটি করপোরেশন এলাকায় (চসিক) যানজট নিরসনে মোবাইল অ্যাপ তৈরি ও পরিচালনায় লোকবল নিয়োগ, অযান্ত্রিক যান নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষণে লোকবল নিয়োগ, লাইন্সেসবিহীন অযান্ত্রিক যানকে রাস্তার আবর্জনা বিবেচনায় সব ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্ন সুপারভাইজার কর্তৃক অপসারণ, জব্দকরণ ও সিটি করপোরেশনের স্টোরে জমাকরণের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে সার্ভে করে ভ্যান বসার সময়, পার্কিং ও স্থান নির্ণয়ে কর্মকর্তার দায়িত্ব বণ্টনের প্রস্তাব করা হয়। মো. মোবারক আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নগরীর যানজট নিরসনে একটি কর্ম-পরিকল্পনা মেয়রের কাছে দিয়েছি। চসিক ও ট্রাফিক বিভাগের সমন্বয়ে যানজটসহ বিভিন্ন বিষয় কীভাবে দ্রুত সমাধান করা যায় সেটি নিয়ে বৈঠক হবে। তিনি বলেন, অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত শহরের অনেক রাস্তা প্রয়োজনের তুলনায় সরু। পাশাপাশি প্রতিটি এলাকায় অবৈধ রিকশা, ভ্যান, ঠেলাগাড়িসহ অযান্ত্রিক যান চলায় যানবাহনের গতি সীমিত করেছে। রাস্তার একটি অংশ দখল করে হকার ও স্ট্রিড ফুড ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করছে। অনিবন্ধিত ও অবৈধ কিছু যান্ত্রিক যানও এক্ষেত্রে দায়ী। অযান্ত্রিক যান, হকার ও যত্রতত্র প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিম্নগতির যান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে যানজট নিরসনের পাশাপাশি রাজস্ব আদায় বাড়বে বলেও জানান তিনি।

নগরীর ৫৭ হাজার রিকশার লাইন্সেস থাকলেও নতুন ৭০ হাজার রিকশা লাইন্সেস দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে তা এক লাখে উত্তীর্ণ করা যেতে পারে, রিকশার জন্য আলাদা রাস্তা নির্ধারণ করা, মূল সড়কের বামে রিকশা চলাচলের জন্য আলাদা লেন করা ও ভিআইপি রোডে অযান্ত্রিক পরিবহন চলাচলে প্রয়োজন অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া, শর্ত সাপেক্ষে তিন ও চার চাকার ভ্যানকে লাইসেন্সের আওতায় আনা, ভ্রাম্যমাণ ব্যবসার জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক নির্ধারিত স্থানের জন্য অনুমোদন সাপেক্ষে স্ট্রিট ফুডের ভ্যান লাইন্সেস দেওয়া, দিনের একটি নির্ধারিত সময়ে যান চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে এমন সড়কে সীমিত সংখ্যক নির্ধারিত স্থানে ভ্রাম্যমাণ হকারদের ভ্যানের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য লাইসেন্স দেওয়া।

সর্বশেষ খবর