মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বায়ুদূষণে ধুঁকছে বন্দরনগরী

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

বায়ুদূষণে ধুঁকছে বন্দরনগরী

চট্টগ্রামের বাতাসে উড়ছে দূষিত ধুলোবালি। দূষিত ধুলোবালি অস্বাস্থ্যকর করছে পরিবেশ। সঙ্গে যোগ হচ্ছে যানবাহনের কালো ধোঁয়া। আছে উন্নয়ন প্রকল্পের ধুলোবালি। শিল্প কারখানার দূষিত ধোঁয়া। ফলে চট্টগ্রামের বাতাস ক্রমেই দূষিত হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে এ দূষণের মাত্রা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে সড়কের পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীদের মুখ চেপে চলতে হয় সড়ক-ফুটপাতে।   

অভিযোগ আছে, প্রতিনিয়তই বাতাস দূষিত হলেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে সরকারি সংস্থাগুলো। দূষণ রোধে সংস্থাগুলোর কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। পরিবেশ অধিদফতর বায়ুদূষণের দায়ে চলতি বছরজুড়ে নগরের মাত্র তিনটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে। সংস্থাটি নিয়ম রক্ষার অভিযান পরিচালনা করে দায়িত্ব সারছে বলেও অভিযোগ। 

চিকিৎসকেরা বলছেন, চট্টগ্রামের দূষিত বায়ু স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ কারণে ফুসফুসের নানা রোগ, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, এলার্জি, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হচ্ছে। অপরিকল্পিত নির্মাণকাজ, অবৈধ ইটভাটা, কল-কারখানা, বিদ্যুৎকেন্দ্র, গাড়ির কালো ধোঁয়াসহ নানা কারণে চট্টগ্রামে বায়ুদূষণ বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানা যায়, বাতাসের প্রতি ঘনমিটারে ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার পরিমাণ ১০০ পিপিএম পার হলেই তাকে বিপজ্জনক মাত্রায় ধরা হয়। অথচ চলতি শীত মৌসুম শুরুর আগেই প্রায় প্রতিদিনই চট্টগ্রামের বাতাসের মান স্বাভাবিক মানমাত্রাকে কয়েকগুণ ছাড়িয়ে গেছে। পরিবেশ অধিদফতরের নির্মল বায়ু ও টেকসই উন্নয়ন প্রকল্পের বাতাসের মান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য মতে, গত ১ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩ দিনের বায়ু মান ছিল অস্বাস্থ্যকর- একিউআই ১৫০ থেকে ২০০। এর মধ্যেও একাধিক দিন একিউআইয়ের মান ছিল ১৯০-এর বেশিও ছিল, চরম অস্বাস্থ্যকরের কাছাকাছি। 

পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম গবেষণাগারের পরিচালক মুফিদুল আলম বলেন, ‘আমাদের তিনটি ক্যাম্প সেন্টার আছে। সেখানে নিয়মিতই চট্টগ্রামের বায়ুমান মনিটরিং করা হয়। অধিদফতরের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়তই অভিযান পরিচালনা করা হয়। সব সময় পর্যবেক্ষণে রেখে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে বড় বড় কিছু প্রতিষ্ঠানকে দূষণের অভিযোগে জরিমানা করা হয়েছে। বাতাসের মান পরিমাপের জন্য পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ, ফয়’স লেক ও নাসিরাবাদে তিনটি স্টেশন রয়েছে। প্রতিটি স্টেশন প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকার বায়ু পরীক্ষা করতে পারে। আর এসব স্টেশনের পর্যবেক্ষণে গত কয়েকমাস ধরে চট্টগ্রামের বাতাসের মান স্বাস্থ্যকর পর্যায়ে ছিল না। শীতের শুষ্ক মৌসুমে বাতাসে ধুলাবালির প্রকোপ বেশি থাকে। তাছাড়া চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় বাতাসের মান আরও নেমে যায়।

সর্বশেষ খবর