শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
ধারাবাহিক উপন্যাস

অটোমান সূর্য সুলতান সুলেমান পর্ব ২৯

রণক ইকরাম

অটোমান সূর্য সুলতান সুলেমান পর্ব ২৯

মুসলিম শাসকদের মধ্যে যেমন শীর্ষে, তেমনি পৃথিবীর ইতিহাসেও অন্যতম সেরা শাসক তিনি। সুলতান সুলেমান খান। অটোমান বা উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান। সুলতান সুলেমানকে নিয়ে অনেক গল্প লেখা হয়েছে। নির্মিত হয়েছে আলোচিত-সমালোচিত টিভি সিরিয়াল মুহতাশিম ইউজিয়েল। আমাদের এ উপন্যাসের ভিত্তি সেই টিভি সিরিজ বা উপন্যাস নয়। মূলত ইতিহাসের নানা বইপত্র ঘেঁটে সুলতান সুলেমানের আমলটি তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিহাসাশ্রয়ী এ উপন্যাসের মূল ভিত্তি অটোমানদের ইতিহাস। বাকিটুকু লেখকের কল্পনা। উপন্যাসের শুরুর দিকে যুবরাজ সুলেমানের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন পাঠক। সিংহাসনে তখন সুলেমানের বাবা সুলতান প্রথম সেলিম। সুলতান সেলিমের সর্বশেষ বিজয়, অসুস্থতা ইত্যাদি পথপরিক্রমায় অটোমান সুলতান হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ করেন সুলেমান খান। এর মধ্যেই হেরেম সংস্কৃতি, প্রাসাদ, প্রশাসনসহ নানা দিক উঠে এসেছে। সুলেমান খানের ক্ষমতা গ্রহণের পর নতুন সূর্যোদয়ের দিকে হাঁটতে শুরু করে অটোমান সাম্রাজ্য। সে যাত্রায় পীরে মেহমুদ পাশাকে স্বপদে বহাল রেখে হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন সুলতান। সবার প্রত্যাশার বাইরে পারগালি ইব্রাহিমকে বানিয়েছেন নিজের খাসকামরা প্রধান। সুলেমান রোডস অভিযানে সাফল্যের পর ফিরে এসেছেন। হুররেম খাতুন সন্তানসম্ভবা। পদ হারাতে চলেছেন পীরে পাশা।  রকমারির প্রতি শনিবারের এ বিশেষ আয়োজনে আজ ছাপা হলো ২৯তম পর্ব।

 

 

 

[পূর্ব প্রকাশের পর]

 

‘কী হলো ইব্রাহিম? চমকে গেলে কেন?’

‘হুজুর... আমি ঠিক বুঝতে পারছি না।’

‘না বোঝার মতো কিছু কী আমি বলেছি?’

‘মানে...।’

‘শোনো ইব্রাহিম। আমি তোমাকে ভাইয়ের মতো দেখি ঠিক?’

‘জি।’

‘ছোটবেলা থেকেই বন্ধুর মতো মিশি। ঠিক?’

‘জি।’

‘আমি তোমার মন্দ চাইব না নিশ্চয়ই।’

‘অবশ্যই।’

‘এবার হেতিজা সম্পর্কে বলি। আমার আদরের বোন। একবার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু তার কপালে সংসার সইল না। এত দিন একা একা আছে। এবার আমরা ওকে পাত্রস্থ করার কথা ভাবছি। আর আমি পাত্র হিসেবে তোমাকেই নির্বাচিত করলাম। তবে এই নির্বাচন আমি আর তুমি ছাড়া আর কেউ জানে না। তোমার আপত্তি থাকলে কাউকে বলব না। আপত্তি না থাকলে আস্তে আস্তে আলোচনা এগোবে।’

‘আ... আমি কেন আপত্তি করব। আপনি আমার সুলতান। আপনি আমার অভিভাবক, আপনি যা ভালো মনে করেন।’

‘মেনে নেওয়ার মতো বল না ইব্রাহিম। মন যেটা বলে সেটাই বল।’

‘শাহজাদি হেতিজাকে অপছন্দ করার কোনো কারণ তো নেই হুজুর।’

উঠে দাঁড়িয়ে ইব্রাহিমকে জড়িয়ে ধরলেন সুলেমান। দুজনের চোখেই অশ্রু।

বেশ কিছুক্ষণ নীরবে কাটল সুলেমান আর ইব্রাহিমের।

‘আচ্ছা আমি আম্মাজানের সঙ্গে এটা নিয়ে কথা বলব। আপাতত কাউকে বলার দরকার নেই। কারণ আম্মার মতামত জানাটাও জরুরি। কথা বলতে হবে হেতিজার সঙ্গেও।’

‘অবশ্যই হুজুর।’

লাজুক লাজুক কণ্ঠে জবাব দিলেন ইব্রাহিম।

‘আমার অনেক ভালো লাগছে ইব্রাহিম। দানা হালিলকে বল ব্যবস্থা করতে। আমি আজকের রাতটা একটু অন্যরকমভাবে কাটাতে চাই।’

‘ঠিক আছে হুজুর। আপনার ভাবনায় কেউ আছে?’

‘উহু।’

‘ঠিক আছে। আমি নিজেই দেখছি।’

হন হন করে হেঁটে বেরিয়ে পড়লেন ইব্রাহিম।

 

 

দানা হালিলের ব্যস্ততা আর ধরে না। রাত অনেক হয়ে গেছে। মুরসেনাকে তৈরি করানো হচ্ছে। হুররেমের মতো মুরসেনাও রুশ মেয়ে। পারগালি ইব্রাহিম নিজে ওকে তৈরি করতে বলে গেছেন। মুরসেনাকে ভালো করে গোসল করানো হলো। গোসলের পর নখ রঙিন করা হলো। চুলে লাগানো হলো জুঁইফুলের সুগন্ধিযুক্ত আতর। এরপর চুল বেঁধে দেওয়া হলো বড় মুক্তার মালা দিয়ে। শরীর যেন না ঘামে এ জন্য লাগানো হলো মেহেদি। চোখে লাগিয়ে দেওয়া হলো সুরমা। লাল সিল্কের শেমিজের ওপর পরানো হলো গাঢ় লাল রঙের লম্বা একটা জামা। জামার ওপরে আঁটোসাঁটো একটা কটি। মাথায় নকশা করা ওড়না। গলায় ঝুঁলিয়ে দেওয়া হলো হীরার ভারী নেকলেস। কানে এত বড় দুল পরিয়ে দেওয়া হলো যে তার কাঁধের ওপরে পড়ে কাঁধ ব্যথা করতে লাগল। সব মিলিয়ে অল্পক্ষণের মধ্যেই তৈরি হয়ে গেল মুরসেনা। দানা হালিলের নেতৃত্বে রক্ষীর দল মুরসেনাকে নিয়ে এগিয়ে চলছে। সুলতানের কক্ষের কাছাকাছি এসে রক্ষী দুজন বিদায় নিল। দানা হালিল আর মুরসেনা এখন দাঁড়িয়ে সুলতানের আবাসস্থলের কাছাকাছি চত্বরে। এই চত্বরটার সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো এটি  হেরেমের যে কোনো অংশ থেকে পুরোপুরি দেখা যায়। এর এক পাশেই সুলেমানের ব্যক্তিগত কামরা। আরেক পাশে প্রবাহিত হচ্ছে একটা মার্বেলের ঝরনা।

সুলতানের কক্ষে ঢুকেই আবার বেরিয়ে এলো দানা হালিল। এরপর ইশারায় মুরসেনাকে ভিতরে ঢুকতে বলল। সুলতানের সঙ্গে দেখা হলে যেন কী করতে হয়। মনে করার চেষ্টা করল মুরসেনা। হ্যাঁ, হাঁটু গেড়ে বসে তার সামনে কপাল মাটিতে লাগিয়ে সম্মান জানাতে হয় তাকে। মুরসেনা দ্রুত তাই করলেন। সুলতান তাকে টেনে ওঠালেন।

‘কী নাম তোমার?’

‘মুরসেনা, জাঁহাপনা।’

‘কোথা থেকে এসেছ তুমি, মুরসেনা?

মুরসেনা বড় করে একটা নিঃশ্বাস নিল।

‘ক্রিমিয়া থেকে জনাব।’

এবার সুলতান চোখ ঘুরিয়ে মুরসেনাকে পরখ করতে থাকলেন। ভাবখানা এমন যেন তিনি বাজার থেকে কোনো জিনিস কিনছেন। তবে সুলতানের চোখে-মুখে তৃপ্তির ছায়াই দেখতে পেলেন মুরসেনা। একটা ছোট ভুল হয়ে গেছে। হাঁটু গেড়ে সুলতানের হাতটা টেনে ধরে ছোট্ট করে একটা চুমু খেল সে। সুলতান হাসলেন। হ্যাঁচকা টানে মুরসেনাকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি।

এরপর মুরসেনা কেবল মোমের পুতুল।

সুলেমান সত্যিকারের সুলতান। তলোয়ারের ঘাঁয়ে ছিন্নভিন্ন করতে থাকলেন মুরসেনাকে।

 

 

পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক শিকারে বেরিয়েছেন সুলতান। সঙ্গে ইব্রাহিম ও অন্যরা। আড্রিয়ানোপোল, মারিতযা নদীর তীরে তাঁবু গাড়া হয়েছে। সুলতান শিকারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর মধ্যেই ইব্রাহিম একটা খেলায় ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। কতগুলো কুকুর লেলিয়ে দিলেন ঝোপের দিকে। কুকুরগুলো ঝোপের দিকে যেতেই নিজের বাসা থেকে উড়াল দিল একটা মোটাসোটা তিতির পাখি। ঠিক তখনই পারগালি ইব্রাহিম নিজের খাঁচার কাপড়টা সরালেন। তিতিরটা উড়াল দিতেই খুলে দিলেন খাঁচা। দ্রুতই বাজপাখিটা উড়াল দিল মুক্ত আকাশে। উড়তে উড়তে চলে এলো অনেক ওপরে। নিচেই তিতিরটাকে দেখতে পাচ্ছে সে। তখনই একটা কাণ্ড করে বসল বাজপাখিটা। নিচের দিকে গোত্তা খেল বাজপাখিটা। দেখে মনে হলো একখণ্ড পাথর খসে পড়ছে ওপর থেকে। নিমেষের মধ্যে সে ধরে ফেলল তিতিরটাকে। ধারালো নখের সাহায্যে ভেঙে দিল মেরুদণ্ড। দুটি পাখিই একসঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। মাটিতে পড়ার একমুহূর্ত আগে তিতিরটাকে ছেড়ে দিল বাজ। তিতিরটা গড়াতে গড়াতে গিয়ে পড়ল জলাশয়ে। ইব্রাহিমের তাড়া খেয়ে কুকুর দুটো দৌড় দিল পাখিটাকে নিয়ে আসার জন্য। এদিকে ইব্রাহিমের পোষা বাজ তার হাতের ওপরে এসে বসল। ইব্রাহিমের ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি। তিনি সুলতানের সামনে আরেকবার প্রমাণ করলেন আদতেই বাজপাখি রক্ষক তিনি।

 

কিছুটা দূরে একটা বুনোগোলাপের ঝোপ। এদিকটায় বেশ অন্ধকার। সহজে কেউ সেদিকে পা বাড়ায় না। সেখান থেকেই হলুদ দুই চোখে রাগ এবং ভয় নিয়ে সব পরখ করছিল একটা শুয়োর। তার চোখে-মুখে ভয় আর আতঙ্ক। এ ধরনের শিকার বাহিনী আগেও দেখেছে সে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাথা গরম করে ফেলল বোবা জন্তুটা। দৌড়ে এসে ইব্রাহিমের ঘোড়াকে আক্রমণ করে বসল। শুয়োরের ধারালো দুই দাঁত লেগে গেল ঘোড়ার পেটে। গর্ত হয়ে গেল সেখানে। রক্ত বের হয়ে এলো গলগল করে। শুয়োরটা আরও একবার গুঁতা দিল ইব্রাহিমের ঘোড়াকে। ইব্রাহিম তখন ঝপাং করে মাটিতে পড়ে গেলেন। এবার বোবা জন্তুটার মনোযোগ গেল ইব্রাহিমের দিকে। সুলতান তখনো বেশ অনেকটা দূরে।

যখনই সে ইব্রাহিমকে আক্রমণ করতে যাচ্ছিল, তখনই একটা তীর ছুড়লেন সুলেমান। শুয়োরের কাঁধে গিয়ে লাগল ওটা। ব্যথায় ককিয়ে উঠল দুরন্ত শুয়োর। কিন্তু তবু থামল না। নতুন উদ্যমে ইব্রাহিমকে আক্রমণ করতে উদ্যত হলো জন্তুটি। আবার সুলেমানের তীর।

এবার শুয়োরের পায়ের মাংস খুবলে নিয়ে গেল তীর। ততক্ষণে নিজেকে অনেকটা সামলে নিয়ে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ালেন পারগালি ইব্রাহিম।

সুলেমান তখনো একটার পর একটা তীর ছুড়েই যাচ্ছেন। এর মধ্যেই শুয়োরটা ঘায়েল হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল।

সুলতানের সৈন্যরা হর্ষধ্বনি করতে লাগল। ঘোড়া থেকে নামলেন সুলতান। এদিক-ওদিক তাকালেন। কিন্তু ইব্রাহিমকে কোথাও দেখা গেল না।

কোথায় গেল ইব্রাহিম?

একটু পরই ইব্রাহিমকে পাশের জলাশয় থেকে উঠে আসতে দেখা গেল। তার হাতে সেই আহত তিতির পাখি।

‘ইব্রাহিম। ভয় পেয়েছিলে নাকি।’

‘না তো হুজুর।’

‘কেন?’

‘আপনি নিজে তীর ছুড়ে রক্ষা করলেন। আপনি থাকতে ভয় কিসের?’

‘যদি আমার তীর পথ ভুল করত।’

‘অসম্ভব।’

‘ধরো ভুল করেই যদি পথ ভুল করত?’

‘তাহলেও কিছু হতো না। আপনার জন্য প্রাণ দিতে পারি যখন তখন। আর আপনার তীরে বিদ্ধ হতে পারাটাও আমার জন্য পরম সৌভাগ্যের সুলতান।’

কুর্নিশ করে মৃদু হাসল পারগালি ইব্রাহিম।

ইব্রাহিমের এই বিনয় ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছেন সুলতান। অটোমানদের বাইরের একজন ইব্রাহিম। অথচ সুলতান আর সুলতানের সালতানাতের প্রতি তার কী অসীম প্রেম! মাঝে মাঝে খুব অবাক লাগে সুলেমানের।

 

তিতিরের মাংস, রুটি আর সঙ্গে করে আনা প্রাসাদের শরবত দিয়ে রাতের খাবার সেরেছেন সুলতান ও পারগালি ইব্রাহিম। রুপালি আলোয় নদীর পানিতে গাছের পাতারা ঝিকিমিকি করছে। গ্রীষ্মের আগমনে রাতের বাতাসের শীতলতা খুব বেশি না হলেও হঠাৎ হঠাৎ কাঁপুনি তোলে। তাঁবুর বাইরে আগুন জ্বালানো হয়েছে। একটু দূরে দুইপাশে সুলতানের ছয়জন দেহরক্ষী নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।

সুলতান আর ইব্রাহিম বসে বসে গল্প করছে।

‘শিকার ভালোই হলো ইব্রাহিম।’

‘জি জনাব। আমার কাছে মন্দ লাগেনি।’

‘তুমি কী জানো আমি শিকারে কেন এসেছি।’

‘বলেছেন তো। যুদ্ধ না করে শিকারে এলেন।’

‘উহু। এটা সামনের কারণ। এর পেছনেও কারণ আছে।’

‘কী কারণ?’

‘এর মধ্যে একটা কারণ অবশ্য তোমাকে বলে ফেলেছি।’

‘মাফ করবেন হুজুর আমি সেটা বুঝতে পারছি না।’

ইব্রাহিমকে একটু ইতস্তত দেখাল।

সুলতান সামনে ফলের বাটি থেকে দুটো আঙ্গুর মুখে পুরে নিলেন। এটা তার অনেক দিনের পুরনো অভ্যাস।

‘তোমাকে একটা প্রস্তাব দিয়েছিলাম মনে আছে?’

‘জি হুজুর।’

এবার আর আগেরবারের মতো খুব একটা লজ্জা পেলেন না ইব্রাহিম।

‘আসলে ওই প্রস্তাবটা দেওয়ার আগ থেকেই আরেকটা বিষয় আমার মাথার ভিতর ঘুরপাক খাচ্ছিল।’

‘জানতে পারি কী সেটা?’

‘অবশ্যই। তোমাকে বলার জন্যই এখানে আসা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে একটা বিষয় নিয়ে আমি খুব চিন্তিত আছি।’

‘কী বিষয়?’

‘আমার ধারণা, পীরে পাশা অনেকটাই বুড়িয়ে গেছেন। এখন আর তিনি প্রধান উজিরের পদের জন্য ঠিক মানানসই নন।’

‘হুজুর কী করতে চাচ্ছেন আপনি।’

‘পীরে পাশাকে প্রধান উজিরের পথ থেকে সরিয়ে দিতে চাই।’

‘কী!’

আঁতকে উঠলেন ইব্রাহিম।

‘আপনি পীরে পাশাকে বরখাস্ত করবেন হুজুর?’

‘আরে না। বরখাস্ত না। সরিয়ে দেব মানে তাকে অন্য কোনো দায়িত্ব দেব।’

‘কিন্তু হুজুর এতদিন ধরে পীরে পাশা প্রধান উজিরের দায়িত্ব পালন করে এসেছেন।’

‘এ কারণেই আমি তাকে মিসরের গভর্নর করে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি আগের মতো বিচক্ষণতা বা দূরদর্শিতা দেখতে পারছেন না। আমার কাছে কেবলই মনে হচ্ছে এরকম দুর্বলচিত্তের একজন বয়োবৃদ্ধ লোক অটোমান সাম্রাজ্যের উজিরের দায়িত্বে থাকতে পারেন না।’

এবার আর কোনো কথা বললেন না ইব্রাহিম। কারণ সুলেমানের দৃষ্টিভঙ্গি মিথ্যা নয়। আসলেই অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছেন পীরে পাশা। অনেক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বড় বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এখন আর নেই তার।

‘কিন্তু তার শূন্যতা পূরণ হবে কী করে?’

এবার হাসলেন সুলতান। সে হাসিতে রাজ্যের রহস্য।

‘তোমার কী মনে হয় ইব্রাহিম? কাকে বানানো যায় পরবর্তী প্রধান উজির?’

পরবর্তী পর্ব আগামী শনিবার

সর্বশেষ খবর