স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত দেশের পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা। বন্যাকবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। সহায়-সম্বল হারিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। খাবার-বিশুদ্ধ পানির অভাবে মানবেতর দিন কাটছে তাদের। অসহায় এসব মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াতে দেশে চলছে ত্রাণ সংগ্রহ। এজন্য বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন চালাচ্ছে নানা তৎপড়তা। প্রতিনিধিদের খবর- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা ভোর হতেই বেরিয়ে পড়ছেন চাঁদার বাক্স হাতে। অলিতে-গলিতে ঘুরে তহবিল সংগ্রহ করছেন তারা। কেউ হলগুলো থেকে কাপড়ের বস্তা হাতে বের হচ্ছেন, কেউ জমা দিচ্ছেন শুকনো খাবারের ব্যাগ। কেউ বন্যার্তদের উদ্ধারে ছেড়েছেন ক্যাম্পাস। কয়েক দিনে অর্ধকোটি টাকার তহবিল সংগ্রহ করেছে বিভিন্ন বিভাগ, হল ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের শিক্ষার্থীরা।
পায়রার এক দিনের বেতন তহবিলে : বন্যায় আক্রান্তদের মানবিক সহায়তার জন্য পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীর এক দিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ দেবেন দুর্গতদের। পাশাপাশি জরুরি খাদ্য সহায়তার জন্য শুকনা খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রীর ৭০০ প্যাকেট ঢাকার নৌবাহিনীর ঘাটিতে প্রদান করেছে তারা। আজ এ খাবার বানভাসিদের মধ্যে বিতরণ করার কথা রয়েছে। টিফিনের টাকা বানভাসিদের : দুই বছর ধরে উপহার ও টিফিনের বাঁচানো টাকা প্লাস্টিকের ব্যাংকে জমাচ্ছিল শিশু সাফা ও সাইফা। ইচ্ছে ছিল জমানো টাকায় শখের খেলনা কিনবে। টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বানভাসি শিশুদের কান্না দেখে জমানো সেই টাকা শিশুদের সহায়তায় দিল। নাটোর চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি কার্যালয়ে সংগৃহীত সহায়তা ফান্ডে এ টাকা জমা দেওয়া হয়।
জজের উদ্যোগে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ : খাগড়াছড়ি জেলা ও দায়রা জজ আবদুল্লাহ আল মামুনের উদ্যোগে বন্যার্তদের খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। গতকাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে আবদুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত থেকে ২ শতাধিক পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন।
পূজার টাকায় ত্রাণ : ভয়াবহ বন্যাপরিস্থিতিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীর পূজার টাকায় বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণসমগ্রী বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ। শুক্রবার রাতে শহরের শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের আখড়ার এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। ত্রাণ সংগ্রহ চুয়াডাঙ্গায় : জেলার শিক্ষার্থী, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন সংগঠন ত্রাণ সংগ্রহ শুরু করেছে। সাধারণ মানুষ স্বউদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। অনেকেই নিজেদের বাড়ির কাপড় চোপড় পৌঁছে দিচ্ছেন ত্রাণের গাড়ির কাছে। নগদ টাকাও দিচ্ছেন অনেকে।