জেলা পরিষদের অর্থায়নে পিচঢালাইকৃত একটি রাস্তার বেশ কিছু অংশ তুলে ফেলে সেখানে দুটি স্থানে ইটের দেয়াল গেঁথে পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে রাস্তাটি। ফলে চরম বিপাকে পড়েছে অন্তত ১০/১২টি পরিবারের কয়েকশ মানুষ। এসব পরিবারের লোকজন এখন একপ্রকার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
নজীরবিহিন এমন ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর দিরাজতুল্লাহ মাতুব্বর ডাঙ্গী এলাকায়। ক্ষমতার পালাবদলের পর স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তির এমন কাণ্ডে এখন তোলপাড় চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, সরকারী রাস্তার পিচের আস্তরন তুলে ফেলে রাস্তার দুই অংশে ইটের দেয়াল গেঁথে দেয়ায় মনে হচ্ছে ‘এটি যেন কোন মগের মুল্লুক’। এমন ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি ভুক্তভোগীদের। রাস্তাটি বন্ধ করে দেবার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে জেলা পরিষদ।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে ও প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, দুর্গাপুর দিরাজতুল্লাহ ডাঙ্গী এলাকার মূলসড়কের সাথে সংযুক্ত শাহজাহান শেখের বাগান থেকে একটি রাস্তা করা হয় মো. হাসমত আলী মাষ্টারের বাড়ী পর্যন্ত। ১৫০ মিটারের এ রাস্তাটি ২০১৬-১৬ অর্থ বছরে জেলা পরিষদের অর্থায়নে ইটের সলিং বিছিয়ে পিচঢালাই করা হয়।
সম্প্রতি আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে এ রাস্তার পাশের জমির মালিক মো. শাহজাহান শেখ তার সহযোগী ফারুক শেখ, মোস্তফা, উজ্জল মোল্লাসহ আরো বেশকিছু ব্যক্তি গত ১৭ আগষ্ট দিনের বেলায় ১৫০ মিটার রাস্তাটির মাঝ বরাবর প্রায় ৫০ মিটার জবর দখল করে এবং ঢালাই রাস্তাটির ইট ও পিচঢালাই সম্পূর্ণ তুলে ফেলে। এসময় তারা রাস্তার শুরুর অংশ এবং মাঝ বরাবর অংশে ইটের দেয়াল তুলে রাস্তাটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়।
সরকারী রাস্তার ক্ষতিসাধন করার বিষয়টিতে স্থানীয় চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলাম নুরুর যোগসাজস রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা একাধিক বার বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানকে বলা হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উপরন্তু শাহজাহান গংদের পক্ষ নেন বলে অভিযোগ।
রাস্তা দখল করার বিষয়ে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সেই শাহজাহান শেখের ভাই ফারুক শেখ বলেন, এ রাস্তার জমিটি আমাদের। বিগত দিনে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জায়গা দখল করে রাস্তা করা হয়। সেইদিন আমরা কোনো বাঁধা দিতে পারিনি। এখন আমাদের ক্ষমতা আছে আমরা জমিটি উদ্ধার করেছি। সরকারী রাস্তার ইটও পিচঢালাই তুলে ফেলা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক শেখ বলেন, যখন তারা জায়গা দখল করে রাস্তা করলো তখন আপনারা কোথায় ছিলেন ? তারা যেভাবে ক্ষমতা দেখিয়ে রাস্তা তৈরী করেছে, তেমনি আমরাও রাস্তার ইট ও পিচ তুলে ইটের দেয়াল তুলে তা বন্ধ করে দিয়েছি।
এ বিষয়ে অম্বিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলাম নুরু বলেন, আমার নাম ব্যবহার করে যে কথাটি বলা হয়েছে তা সঠিক নয়। আমি কাউকে রাস্তা বন্ধ করে দেবার কথা বলিনি।
ফরিদপুর জেলা পরিষদের প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, সরকারি রাস্তা কেউ ইচ্ছে করলেই তুলে ফেলতে পারে না। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো। প্রয়োজনে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল