বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আমনে আশার আলো

পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে ঘরে উঠবে ধান

হাওর এলাকায় পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট আগাম বন্যা এবং ব্লাস্ট রোগে চলতি বছর বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। আউশও উৎপাদন হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তিন শতাংশ কম। এ অবস্থায় খাদ্য ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারকে বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি করতে হচ্ছে। তবে এ সংকটে আশার আলো হয়ে দেখা দিচ্ছে আমনের বাম্পার ফলন। আর ৫-৬ সপ্তাহের মধ্যে আমন ধান ওঠা শুরু করবে। চলতি বছর আমন চাষের টার্গেট ছিল ৫৩ লাখ পাঁচ হাজার হেক্টরের, কিন্তু রোপা আমনের চাষ হয়েছে আরও ৬০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে। বাড়তি জমির চাষাবাদ থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার টন ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর কৃষকরা বেশি করে আমন লাগিয়েছে। অনেকে পাট কেটে সবজি চাষের জন্য জমি ফেলে না রেখে আমন বুনেছে। আমনের ফলন নিয়ে কৃষকরা দারুণ আশাবাদী। কারণ বন্যার পর পলিতে ভালো ফলন হয়। কার্তিকের ২০ তারিখ থেকে পুরোদমে আমন ধান তোলা শুরু হবে। কিছু কিছু জায়গায় ইতিমধ্যে আমন কাটা শুরুও হয়েছে। এ বছর বন্যায় আমন চাষও ব্যাহত হয় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। কৃষি বিভাগের ত্বরিত পদক্ষেপ কৃষকদের ঘুরে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করে। এতে সফলতাও আসে। শুরু হয় ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে আমন চারা রোপণ। শেষ পর্যন্ত আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি পায় কৃষকদের উৎসাহে। কয়েক বছর ধরে ধান চাষে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। লাভ না হওয়ায় কৃষকরা ধান ছেড়ে সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম সবজি উৎপাদনকারী দেশ। কৃষকরা ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেললে তা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেবে। চলতি বছর বাংলাদেশে চালের উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় চালের আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা মাথাচাড়া দেয়। চালের দাম গড়ে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়ে যায় বিশ্ববাজারে। বাড়তি দামে চাল কিনতে গিয়ে সরকারকে মহাসংকটে পড়তে হচ্ছে। দেশে যে পরিমাণ জমিতে আমন চাষ হয় তার পরিমাণ খুব একটা বেশি নয়। তারপরও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন চাষ চালের দামের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে কিছুটা হলেও অবদান রাখবে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বোরো ধান ঘরে ওঠা পর্যন্ত বিদেশ থেকে চাল আমদানি অব্যাহত রাখতে হবে।  কোনোভাবেই যাতে খাদ্য সংকট মাথাচাড়া দিয়ে না ওঠে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর