অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সবসময় সরব আমেরিকাতেও অপ্রাপ্ত বয়সে তথা শিশুদের বিবাহের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। ২০০০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ কন্যা শিশুর বিয়ে হয়েছে যাদের বয়স ১০ বছর ছিল এবং বিয়ে হয় প্রাপ্ত বয়স্কদের সাথে। কারণ, কন্যা শিশুদের বিয়ের বিরুদ্ধে সে সময়ে কোন নিষেধাজ্ঞা ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রে শিশুর বিয়ে বন্ধ করার কলাকৌশল নিয়ে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘আনচেইন্ড অ্যাট লাস্ট’র জরিপ পরিচালনাকারীরা ১৪ আগস্ট গণমাধ্যমে বলেছেন, ২০১৭ সাল পর্যন্ত কন্যা শিশুদের বিয়ের বিরুদ্ধে কোন আইন ছিল না।
গবেষণা জরিপ অনুযায়ী কন্যা শিশুর বিয়ে হয়েছে সবচেয়ে বেশি টেক্সাসে ৪১৭৭৪। ক্যালিফোর্নিয়ায় ২৩৫৮৮, ফ্লোরিডায় ১৭২৭৪, নেভাদায় ১৭৪০৩ এবং নর্থ ক্যারলিনায় ১২৬৩৭টি। অপরদিকে উপরোক্ত ১৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম কন্যা শিশুর বিয়ে হয়েছে রোড আইল্যান্ডে ১৭১। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আরো কয়েকটি স্টেটে বরাবরই কন্যা শিশুদের বিয়ের পিড়িতে বসানোর ঘটনা খুব কম। এর মধ্যে রয়েছে নিউ হ্যামশায়ার ২০৬, দেলওয়ারে ২১৯, ভারমন্টে ২৭২। জরিপে আরো উদঘাটিত হয় যে, নেভাদা, আইডাহো, আরকানসাস, কেন্টাকি এবং ওকলাহোমা স্টেটে জনসংখ্যায় শিশুর হারের চেয়ে কন্যা শিশুদের বিয়ের ঘটনা বেশি।
এ ক্ষেত্রে নিউ হ্যামশায়ার, ডিসি, রোড আইল্যান্ড এবং মিনেসোটা স্টেটে সবচেয়ে কম। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে শিশু বিবাহের বিরুদ্ধে আইন হয়েছে এবং বিয়ের বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে কমপক্ষে ১৮ বছর। অবশ্য, এখোন চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের পরামর্শ অনুযায়ী বিয়ের বয়স কমপক্ষে ১৯ বছর করার দাবি রয়েছে সারা আমেরিকায়। যদিও উচ্চ শিক্ষিত তরুণ-তরুণীর বড় একটি অংশ নিজেরা নিজের পায়ে না দাঁড়ানো পর্যন্ত বিয়ের পিড়িতে বসতে চাচ্ছেন না। উপরোক্ত গবেষণা জরিপ অনুযায়ী কন্যা শিশুর বিয়ের ঘটনা ঘটেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র ও স্বল্প শিক্ষিত পরিবারে। কন্যা শিশুদের প্রতিষ্ঠিত পুরুষের কাছে বিয়ে দিতে পারলেই অভিভাবকেরা দায়গ্রস্ত থেকে অব্যাহতি পেতেন বলে ভাবতেন। ১০/১২ বছর বয়েসী শিশুরা পরবর্তীতে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছে এবং অনেকে সন্তান ধারনের ক্ষমতা হারিয়েছে বলেও গবেষণা জরিপে জানা যায়।
বিডি প্রতিদিন/এএ