ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের সাম্প্রতিক ঘটনাকে বাংলাদেশের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক নারী নির্যাতন বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট গবেষক ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ।
রবিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘‘ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষা কর’ শিরোনামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষকবৃন্দের ব্যানারে এ মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অর্ধশত শিক্ষক অংশ নেন।
স্যার পি জে হার্টগ, অধ্যাপক আহমেদ ফয়জুর রহমান, অধ্যাপক রমেশ চন্দ্র মজুমদারের স্মরণ করে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, এই অধ্যাপকরা কোনো শিক্ষার্থীর সামান্য ইনফ্লুয়েঞ্জা হলেও ছাত্রদের কাছে ছুটে যেতেন। এমনও হয়েছে রাত দুইটা-তিনটা পর্যন্ত সঙ্গে থাকতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যিনি উপাচার্য তিনি শিক্ষার্থীদের যেমন শিক্ষক, তেমন অভিভাবকও।
কবি সুফিয়া কামলা হল থেকে ছাত্রীদের বের করে দেওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, উপাচার্য বলেছেন অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। এটা আমার কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক মনে হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোনো নারী নির্যাতিত হলো। সেটা হলো বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ভূখণ্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। সুতরাং, এটা আমাদের সবার জন্য লজ্জার। আমি শুধু এটা বলবো প্রাতিষ্ঠানিক নারী নির্যাতনের ঘটনা এটাই যেন সর্বশেষ হয়।
শিক্ষার্থীদের পাশে কথা জানিয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, তোমাদের যে কোনো ন্যায্য দাবির সঙ্গে আমরা আছি, পাশে থাকবো। যদি ছাত্রদের হয়রানি করা হয়, তাহলে শিক্ষকরা সমুচিত জবাব দেবেন। ছাত্রদের আটক করার আগে আমাদের আটক করতে হবে।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ৬টি লিখিত দাবি পাঠ করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান। দাবিগুলো মধ্যে অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষার পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে হবে; তাদের মত প্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে; বিধিসম্মত সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ছাড়া অন্য কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে নারকীয় তাণ্ডব ঘটানোর জন্য যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে উল্লেখযোগ্য।
অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এমএম আকাশের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাসরীন ওয়াদুদ, আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বেপারী, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক সংগীতা আহমেদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তাসনীম সিদ্দিকী প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/২২ এপ্রিল, ২০১৮/মাহবুব