ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে ছাত্রলীগের সকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিচার দাবিতে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি এবং আওয়ামী দোসর হিসেবে ভূমিকা পালনকারীদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল ও সদস্য সচিব শামসুল আরেফিনের নেতৃত্বে এ কর্মসূচি দুটি পালন করা হয়। এ-সময় শুরুতে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলের শুরু থেকে দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলন করে এসেছে। দেশের ছাত্র-তরুণ-যুবকদেরকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সংগঠিত করতে গিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ অসংখ্য বিরোধী মতের সাধারণ শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করেছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘এ ক্যাম্পাসে কতিপয় ফ্যাসিস্টের দোসর ছাত্রলীগের এই নির্যাতনের সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছে। বিগত জুলাই আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান চলাকালীন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী ও তাদের দোসররা অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ওপর নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে। এতে অনেক শিক্ষার্থী হতাহত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আপনি অতিদ্রুত আমাদের দাবি মেনে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি দীর্ঘ দেড় দশকের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে নিপীড়িত শিক্ষার্থীদের বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করবেন।’
এর আগে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে একটি বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন নেতাকর্মীরা। এ সময় মিছিলটি পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে শান্ত চত্বরে এসে শেষ হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে যেসকল শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের হামলা-মামলা, গুম-খুনের শিকার হয়েছেন সর্বপ্রথম তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি যে সকল ছাত্রলীগের দোসররা প্রশাসনের আশ্রয়ে এখনও মুক্ত বাতাসে ক্যাম্পাসে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে তাদেরও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাশাপাশি প্রশাসনের যারা জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগকে সহায়তা করেছে তাদের বহিষ্কার করতে হবে। ছাত্রদল চায় না তারা আইন নিজের হাতে তুলে নিক। তাই অতিদ্রুত তাদের বিচার করতে হবে। ছাত্রদল সবসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলে। ছাত্রদল শান্তিপ্রিয় তাই তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে না। প্রশাসন যদি তাদের বিচার না করে তাহলে ছাত্রদল তাদের বিচার করতে সক্ষম।’
সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘গত ১৭ বছরে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা যে সকল হত্যাযজ্ঞ করেছে এর জন্য তার ফাঁসি দাবি করছি। যে সকল ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ কর্তৃক নির্যাতিত হয়ে ছাত্রত্ব হারিয়েছে তাদের যথাযথ সম্মানের সাথে আবার অধ্যয়নের সুযোগ দিতে হবে।'
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ