শুদ্ধি অভিযান শুধু আওয়ামী লীগের লোকের বিরুদ্ধে নয়, এ অভিযান সবার বিরুদ্ধে চালানো হবে। বিএনপির নেতাকর্মীরা কে কী করছেন, কোথায় বসে কী অপকর্ম করছেন? সব খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। সময়মতো টের পাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রবিবার দুপুরে নগরের দি কিং অব চিটাগাং হলে চট্টগ্রাম বিভাগের ৬ জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের প্রতিনিধি সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ছয় জেলার নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত এই প্রতিনিধি সভা স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় মিলন মেলায় পরিণত হয়।
প্রতিনিধি সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের ঘরটা শেষ করে অপরটা ধরবেন। নেটের জালে সবার অপরাধ ধরা পড়বে। নিজ ঘরের শুদ্ধি অভিযান শেষ হলে বিএনপির দুর্নীতিবাজ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও অভিযান চালানো হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু নেই কিন্তু আওয়ামী লীগ আছে। ঝড়ের বিরুদ্ধে, দুর্যোগের বিরুদ্ধে, অন্ধকারের বিরুদ্ধে, অমানিশার বিরুদ্ধে সাহস নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার নাম আওয়ামী লীগ। আমরা মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে বিজয়ের জয়গান গাই। আমরা ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়ে সৃষ্টির পতাকা উড়াই। আমরা আওয়ামী লীগ, আমরা উত্তাল সমুদ্রের, অমানিশার অন্ধকারেও মানুষের জয়গান গাই। বীরের রক্ত ছুঁয়ে এগিয়ে যাই।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, শেখ হাসিনার কর্মী। এই চট্টগ্রাম বিপ্লবী সূর্যসেনের দেশ, অনেক স্মৃতি, অনেক সংগ্রাম আছে এই বীর চট্টলায়। এই চট্টগ্রাম আঘাতে আঘাতে বিপর্যস্ত হয়েছে, পর্যুদস্তু হয়েছে- কিন্তু পরাজয় মেনে নেয়নি। পৃথিবীতে মুক্তির সংগ্রামে এত ত্যাগ, এত নির্যাতন সম-সাময়িক বিশ্বে আর কোনো রাষ্ট্রনায়ককে সহ্য করতে হয়নি। কিন্তু নেত্রী শেখ হাসিনা ওই পরিমাণ ত্যাগ-তিতিক্ষা সহ্য করেছেন। এক সময় আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকবে কি-না? এ রকম ভবিষ্যৎবাণী করেছিল অনেকে। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা হাল ধরে সেই সংগঠনকে এগিয়ে এনেছেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পরমাণু বোমা বানানো ছাড়া আর্থ-সামাজিক সকল উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে বাংলাদেশ ভারত, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে পেছনে ফেলেছে। এ কৃতিত্ব শেখ হাসিনার। গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে জনপ্রিয়, সাহসী ও দূরদর্শী নেত্রীর নাম শেখ হাসিনা। তিনি প্রমাণ করেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে, টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে, অনিয়মের বিরুদ্ধে নিজের দলকেও ছাড় দেওয়া হবে না। এটাই হলো সত্য।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে বলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। আওয়ামী লীগ মানুষের দল। মানুষের ভালোবাসা হারিয়ে ফেললে বেঁচে থাকা দায়। তাই সময় থাকতে ভালো হয়ে যান। দলে বসন্তের কোকিলের আগমন ঘটাবেন না। তারা কিন্তু মৌসুম আসলে আসবে, আবার মৌসুম চলে গেলে তারাও চলে যাবে।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এর সভাপতিত্বে ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি, চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপঙ্কর তালুকদার এমপি, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব