চট্টগ্রামে চলছে কঠোর লকডাউন। সড়কে নেই গণপরিবহন, নেই পথচারী, সড়ক ফাঁকা। নগরে দুই প্রবেশ পথে আছে সেনা বাহিনীর চেকপোস্ট, নগরের পথে পথে ও মোড়ে মোড়ে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার পরও লকডাউন দেখতে সড়কে বের হয়েছে অনেক উৎসুক মানুষ।
অনেকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে মেতে উঠেছে আড্ডায়। নগরের ২০টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আছে পুলিশের তল্লাশি চেকপোস্ট। তবে একান্ত প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হলেই পরিবহন ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। লকডাউন বাস্তবায়ন ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে সতর্কতামূলক মাইকিং করছে রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবীরা।
দুই প্রবেশপথে সেনা বাহিনীর চেকপোস্ট
চট্টগ্রামে লকডাউন সফল করতে মাঠে টহল এবং নগরের দুই প্রবেশ পথে চেকপোস্ট বসিয়েছে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশন দায়িত্বপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে চেকপোস্ট এবং টহল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। নগরের প্রবেশ পথ কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু ও সিটি গেট মোড়ে অবস্থান করা চেকপোস্ট ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবেন। চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে সর্বমোট ২৮টি টহল কাজ করছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরে সাতটি টহল টিম এবং দুইটি চেকপোস্ট কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
২১ উৎসুক আটক ও ৫টি গাড়ি জব্দ
নগরের অনেক এলাকায় লকডাউন কেমন হচ্ছে- তা নিয়ে কৌতূহল-উৎসুকে আছে অনেকে। আজ সকালে নগরের ডবলমুরিং থানাধীন আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়ে লকডাউন দেখতে আসা এমন ২১ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় ৫টি গাড়ি জব্দ এবং ১০টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ সকালে নগরের বাদামতলী মোড়ে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে অযথা ঘোরাঘুরির দায়ে অভিযুক্তদের আটক ও গাড়ি জব্দ করে। এ সময় ঘটনা দেখতে সেখানেও ভিড় জমায় উৎসুক জনতা।
ফাঁকা সড়ক
আজ সকালে লকডাউনের প্রথম দিনে সড়কে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি তেমন দেখা যায়নি। মাঝে মাঝে পথচারী দেখা মিললেও তা হাতে গুণা। অনেকে অফিসগামী। ফলে সড়ক পুরোই ফাঁকা। তাছাড়া নগরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের চেকপোস্ট রয়েছে। নগরের আন্দরকিল্লা, জামালখান, নিউ মার্কেট, চকবাজরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ফাঁকা সড়ক দেখা যায়।
তাছাড়া, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলা এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলার হাটহাজারী, রাউজান, ফটিকছড়ি, ভুজপুরসহ বেশ কয়েকটি উপজেলা থেকে মানুষ শহরে প্রবেশ অক্সিজেন মোড়ে ছিল না কোনো মানুষ। অক্সিজেন মোড়ে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। তবে একান্ত প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হলেই পরিবহন ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। সড়কে কোনো ধরনের গণপরিবহন না থাকায় এর সুযোগ নিচ্ছেন রিকশা চালকরা। ২০ টাকার ভাড়া নিচ্ছে ৫০ টাকা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বলেন, কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যদের নিয়ে নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। অকারণে কেউ আড্ডা দিলে, বের হলে সেখানেই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ বলেন, সরকারি নির্দেশনা মতে, লকডাউন বাস্তবায়নে মহানগরীর ৪টি প্রবেশ ও বাহির পথসহ মোট ২০টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের পক্ষ থেকে চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা যাতে কেউ অমান্য করতে না পারে সে লক্ষ্যে পুলিশের ক্রাইম ও ট্রাফিক বিভাগ চেকপোস্টগুলোতে তল্লাশি অব্যাহত রেখেছে। সপ্তাহব্যাপী লকডাউনে অভিযান চলমান থাকবে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর