পুরনো কোচ পাল্টে নতুন মলাটের সম্পূর্ণ সাদা কোচে চলাচল শুরু করেছে বিজয় এক্সপ্রেস ও উপকূল ট্রেন। বিজয় এক্সপ্রেসে ১৪টি কোচ চলছে চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রুটে এবং ঢাকা- নোয়াখালী উপকূল এক্সপ্রেসে ১৬টি কোচ নিয়েই সোমবার থেকে পৃথক দু’টি রুটে আনুষ্ঠানিকভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিক এই বগিতেই চলাচল শুরু হয়েছে।
এখানে রেলওয়ের সবচেয়ে প্রেস্টিজিয়াস আধুনিক ও উচ্চ গতির ট্রেন সুর্বণ এক্সপ্রেসের-আধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগিগুলোই যুক্ত হচ্ছে এই বিজয় ও উপকূল ট্রেনে। তাছাড়া দু’টি ট্রেনের সময়সূচিও পরিবর্তন এনেছেন রেলওয়ে। একই দিন থেকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিজয়, উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন পরিবর্তিত সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল শুরু করে।
সোমবার বিকাল পৌনে তিটায় নতুন কোচে উপকূল ট্রেন উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন এমপি এবং এর আগে সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম থেকে বিজয় ট্রেন উদ্বোধন করেন রেলওয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি।
উদ্বোধনের বিষয়টি নিশ্চিত করে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি-অপারেশন) সরদার শাহাদাত আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রেলওয়েতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি ট্রেনেই নতুন কোচে চলাচল শুরু হয়েছে। পুরনো কোচ পরিবর্তন করে যাত্রীদের মান উন্নয়নে রেল প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে প্রতিটি ট্রেনেই আরো পরিবর্তন আসবে। তবে রেলমন্ত্রীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশনায় রেল এগিয়ে যেতে আরো নতুন নতুন পরিকল্পনায় কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
একই কথা বললেন পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনও।
পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী বলেন, সুবর্ণ এক্সপ্রেসের চায়না সাদা বগি নিয়ে নতুন আঙ্গিকে যাত্রা শুরু করবে উক্ত দু’টি ট্রেন। বিজয় এক্সপ্রেসে ১৪টি বগি থাকবে। ৫টি এসি, ৫টি শোভন চেয়ার। এছাড়াও থাকবে-পাওয়ার কার এবং গার্ড ব্রেক।
অপরদিকে, উপকূল এক্সপ্রেসে থাকবে ১৬টি বগি। সেমাবার থেকে বিজয় ও পাহাড়িকা ট্রেনের সময়সূচিও পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন সময়সূটি অনুযায়ী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন চট্টগ্রাম ছাড়বে সকাল ৯টায়, ময়মনসিংহ পৌঁছাবে বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে। পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন চট্টগ্রাম ছাড়বে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে, সিলেট পৌঁছাবে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে। উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন সিলেট থেকে ছাড়বে রাত ৮টা ৩০ মিনিটে, চট্টগ্রাম পৌঁছাবে বিকেল ৫টায়।
রেলওয়ে ও স্থানীয় সূত্রে আরো জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে পিএইচটি টাইপে পুরনো বগিতে চলছিল বিজয় ও উপকূল এক্সপ্রেস। এই দুই রুটের যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল-শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিক বগির। শেষ পর্যন্ত রেলওয়ে মন্ত্রণালয় থেকে এই দুটি ট্রেনের বগি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়। এতে সোমবার থেকে ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রুটে চলাচলকারী বিজয় এক্সপ্রেস এবং নোয়াখালীগামী উপকূল ট্রেনের রেক পরিবর্তন হয়েছে। এ দুই রুটে আগে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোনো বগি ছিল না। দীর্ঘদিন পর ময়মনসিংহ ও নোয়াখালীবাসীর এই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন নোয়াখালী থেকে ঢাকার উদ্দেশে যায় সকাল ৬টায়, ঢাকায় পৌঁছে ১১টা ৪৫ মিনিটে। ঢাকা থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশে ছাড়ে বিকেল তিনটা ২০ মিনিটে ও পৌঁছে রাত ৯টা ২০ মিনিটে। ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছাড়ে রাত ৮টা ৩০ মিনিটে, চট্টগ্রাম পৌঁছে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে। চট্টগ্রাম থেকে ছাড়ে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ও ময়মনসিংহ পৌঁছে বিকেল তিনটা ৫৫ মিনিটে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন