চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া উপজেলার বাসিন্দা জিল্লুর ভান্ডারীকে গুলি করে হত্যা মামলায় দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া মামলায় অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় ৫ আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম এ রায় দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুস সাত্তার।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো মো. ইসমাইল ওরফে পিস্তল ইসমাইল এবং শহীদুল ইসলাম খোকন। যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন-আবু, কামাল, জসিম, তোতা, নাছির ও সুমন এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তাছাড়া সাইফুদ্দিন, আজিম, নাজিম, রঞ্জু ও জাহাঙ্গীরকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি রাতে রাঙ্গুনীয়া উপজেলার রানীরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ফটকের কাছে জিল্লুর রহমান ওরফে জিল্লুর ভান্ডারীকে মারধরের পর গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ আজিম উদ্দিন রাঙ্গুনীয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় সিআইডি।
আরো জানা যায়, ঘটনার তিনমাস আগে জিল্লুর ভান্ডারীর ভাই মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বাবলুকে কাতার নিয়ে যান আসামি ইসমাইলের ভাই মোহাম্মদ জব্বার। সেখানে যাওয়ার পর বাবলু বুঝতে পারেন, তার ভিসা নিয়ে জটিলতা আছে। এ নিয়ে বাবলুর সঙ্গে জব্বারের কথা কাটাকাটি হয়। পরবর্তীতে বাবলুর ভিসা বাতিল করে তাকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেন জব্বার।
পরে ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি রাতে জব্বারের ভাই ইসমাইলকে রানিরহাট বাজারে পেয়ে জিল্লুর ভান্ডারী তার ছোট ভাইকে দেশে ফেরত পাঠানোর কারণ জানতে চান। এ সময় ভিসা বাবদ দেওয়া টাকা ফেরত চান জিল্লুর। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরদিন রাতে জিল্লুরকে একা পেয়ে মারধর করে আসামিরা। একপর্যায়ে তার পায়ে গুলি করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে রাতেই তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ২৮ মে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলার অভিযোগপত্রে মোট ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এছাড়া আসামিদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খোকন ও খালাস পাওয়া রঞ্জু কারাগারে আছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ইসমাইল ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামিই পলাতক আছেন। রায় ঘোষণার সময় সাইফুদ্দিন, আজিম ও নাজিম আদালতে হাজির ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন