শিরোনাম
২২ মে, ২০২২ ১৯:৪৭

কমেছে কর্ণফুলী নদীর গভীরতা ও প্রশস্ততা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

কমেছে কর্ণফুলী নদীর গভীরতা ও প্রশস্ততা

চট্টগ্রাম বন্দরের প্রাণখ্যাত কর্ণফুলী নদীর গভীরতা ও প্রশস্ততা দুটোই কমেছে। গত ২২ বছরে ভাটার সময় নদীর প্রশস্ততা কমেছে ৫২০ মিটার। অধিকাংশ জায়গায় গভীরতা স্থানভেদে ২ থেকে ১৩ দশমিক ৬ ফুট। কোথাও সর্বোচ্চ ৭৮ ফুট পর্যন্ত পাওয়া যায়। দখল, দূষণ ও অব্যবস্থাপনার কারণে ক্রমেই ছোট হচ্ছে কর্ণফুলী নদীর প্রশস্ততা, সঙ্গে কমছে গভীরতা।   

রবিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশের গভীরতা ও দখল জরিপ ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। কর্ণফুলী নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলিউর রহমান।   

কর্ণফুলী নদীর তলদেশের বাস্তব পরিস্থিতি ও দখল নিয়ে গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল জরিপ পরিচালনা করা হয়। জরিপ পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও রোড কমিউনিকেশন বিশেষজ্ঞ ড. স্বপন কুমার পালিত, গবেষক অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী ও মেরিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নোমান আহমদ সিদ্দিকি।     

জরিপে বলা হয়, ম্যানুয়াল ও ফ্যাদোমিটারের মাধ্যমে ভাটার সময় নদীর  তলদেশের গভীরতা পরিমাপ করা হয়। এতে দেখা যায়, কর্ণফুলী নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ চর পাথরঘাটা ব্রিজঘাট এলাকায় ২৫ ফুট, মাঝ নদী বরাবর ৩৮ ফুট, উত্তর পাশে ফিরিঙ্গি বাজার ব্রিজঘাট এলাকায় ২৪ ফুট। এই এলাকাটি নিয়মিত ড্রেজিং করায় নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ রয়েছে। 

কিন্তু এর ঠিক ৫০০  মিটার উজানে চাক্তাই খালের মোহনায় উত্তর পাশে কর্ণফুলীর প্রকৃত সীমানা থেকে ৩০০ ফুট নদীর অংশে গভীরতা মাত্র ২ ফুট, মাঝ নদী বরাবর ১৩.৬ ফুট এবং দক্ষিণ পাশে তীরের কাছাকাছি গভীরতা ৪৮ ফুট। তাছাড়া নদীর আরও ৫০০ ফুট উজানে উত্তর পাশে রাজাখালী খালের মোহনায় মাঝ নদীতে গভীরতা মাত্র ৪ ফুট। কিন্তু শাহ আমানত সেতুর তিন নম্বর পিলার বরাবর নদীর গভীরতা ৬০.৯ ফুট।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অপরিকল্পিত খনন এবং চাক্তাই খালের মাছ বাজারকে নদীর অংশ ইজারা দেওয়ার কারণে নদীর প্রশস্ততা ও গভীরতা কমেছে। নদীর প্রবাহের এলাকা কমে যাওয়ায় সেতুর পিলারের নিচে নদীর তলদেশের মাটিতে ছোটবড় ফাটল দেখা দিয়েছে। এটা সেতুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া কয়েকটি পিলারের গোড়ার মাটিও সরে যাচ্ছে। তাই কর্ণফুলী নদী রক্ষায় পরিকল্পিত খনন করা, নদীকে অবৈধ দখলমুক্ত করা, ইজারা প্রদান বন্ধ করা, ময়লা– আবর্জনা না  ফেলাসহ নানা উদ্যোগ নেয়া জরুরি।     

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলিউর রহমান বলেন, ‘নদীর দুইপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে গত ২০ বছরে যা ভরাট হয়েছে, তা নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে। এছাড়া নদীর দূষণরোধে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে উদ্যোগ নিতে হবে এবং একটি সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী, মেরিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নোমান সিদ্দিকী, অধ্যাপক প্রদীপ কুমার দাশ, অধ্যাপক জনার্দন বণিক, অ্যাড. সেলিম চৌধুরী, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতির সভাপতি এস এম পেয়ার আলী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাফর আহমেদ প্রমুখ।    

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর