পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের কর্মাশিয়াল দপ্তরের ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৬টি কাজের কোটি টাকার টেন্ডার ‘সমঝোতার নেপথ্যে’ কাজ করছেন রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। পৃথকভাবে ৬টি কাজের মধ্যে ২টির ৪০ লাখ টাকা এবং ৪টির ৬০ লাখ টাকার কাজ রয়েছে বলে রেল সূত্রে জানা গেছে। এ কাজগুলো ছাড়াও প্রতিটি কাজের নির্দিষ্ট কমিশন পাওয়া সত্বেও এবার বড় অংকের টাকার লোভে কৌশলে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ দেয়ার জন্য নেপথ্যে কাজ করে যাচ্ছেন চীফ কর্মাশিয়াল ম্যানেজার (সিসিএম) দপ্তরের চিহ্নিত কর্মচারিরা। এতে বিএনপি সর্মথিত চিহ্নিত কর্মচারিরাও মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন বাণিজ্য করার অভিযোগও রয়েছে। উক্ত পৃথক ৬টি কাজের কোটি টাকার টেন্ডারের শিডিউল জমাদানের সময় কর্মচারিদের ‘রহস্যজনক বা কৌশলী’ ভূমিকার কারণে সংঘর্ষের আশংকাও করছেন রেল কর্মকর্তা-কর্মচারি ও ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্টরা।
আজ মঙ্গলবার কোন টেন্ডার শিডিউল বিক্রয় হয়নি বলে জানান সিসিএম দপ্তরের এ কাজের ডিলার ও দাবি পরিদর্শক গ্রেড-২) মোমিনুল ইসলাম। তবে এখানে কোন ধরণের ‘সমঝোতা’র সুযোগ নেই এবং ওপেন টেন্ডার হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে টেন্ডারসহ রেলের সকল কার্যক্রমে কোন ধরণের অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা ঘটে, তাহলে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) প্রকৌশলী মো. আবদুল হাই।
নাম প্রকাশ না করাও শর্তে কয়েকজন ঠিকাদার বলেন, গত ২ মার্চ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেও সিসিএম দপ্তরের এ কাজের টেন্ডার শিডিউল বিক্রয় হচ্ছে না। একটি চক্রকে টেন্ডার ফরম নামে-বেনামে দেয়ার জন্য কৌশলী দায়িত্ব পালন করছেন চিহ্নিত কিছু অসাধু কর্মচারি। এতে দায়িত্বশীল রেলের কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা প্রতিটি কাজের কমিশন নিলেও এবার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের নেপথ্যেও জড়িয়ে পড়েছেন।তবে আজ মঙ্গলবারও শিডিউল নেয়ার জন্য গেলে এখনও পর্যন্ত শিডিউল তৈরি হয়নি বলে জানান দায়িত্বশীল ডিলার।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, নিয়মতান্ত্রিকভাবে গত ২ মার্চ বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকায় পৃথক ৬টি ও ২টি কাজের দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন পূর্বাঞ্চলের চীফ কর্মাশিয়াল ম্যানেজার (সিসিএম) সরদার শাহাদাত আলী। পৃথকভাবে এ ছয়টি কাজের মধ্যে রয়েছে একটি গ্রুপে রয়েছে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন স্টেশনের জন্য টাকা গণনা ও জাল টাকা সনাক্ত মেশিন সরবরাহ এবং চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্টেশনের জন্য টাকা গণনা ও জাল টাকা সনাক্ত মেশিন সরবরাহের দুটি কাজ। প্রায় ৪০ লাখ টাকার উক্ত দুটি কাজের শিডিউল ক্রয়ের শেষ তারিখ ২২ মার্চ দুপুর ১২টা এবং জমা দেয়ার শেষ তারিখ হচ্ছে ২৩ মার্চ দুপুর ১২টা। অপর ৪টি গ্রুপে রয়েছে ১, চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্টেশনের জন্য তিন আসন বিশিষ্ট ওয়েটিং চেয়ার সরবরাহ ২, ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন স্টেশনের জন্য তিন আসন বিশিষ্ট ওয়েটিং চেয়ার সরবরাহ ৩, ঢাকা বিভাগে বিভিন্ন স্টেশনের জন্য আলমিরা সরবরাহ এবং ৪, চট্টগ্রাম বিভাগে বিভিন্ন স্টেশনের জন্য আলমিরা সরবরাহের কাজের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। প্রায় ৬০ লাখ টাকার উক্ত চারটি কাজের শিডিউল ক্রয়ের শেষ তারিখ ১৯ মার্চ দুপুর ১২টা এবং জমা দেয়ার শেষ তারিখ হচ্ছে ২০ মার্চ দুপুর ১২টা। নিয়ম হচ্ছে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই টেন্ডার শিডিউল বিক্রয় করতে হবে। এতে ৬দির পার হলেও টেন্ডার শিডিউল কোন ঠিকাদার নিতে পারেননি। এতে পিপিআর-৮ এর আইন ভঙ্গ হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার