কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশ।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে ‘জাগরণে অস্তিত্বে ৭১’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়। বিক্ষোভ মিছিল করা ছাত্রলীগের এ অংশটি নগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
মানববন্ধনে চবি ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজন বলেন, প্রথম থেকেই আমরা বলে আসছি দিয়াজ ইরফান চৌধুরীকে হত্যা করা হয়েছে। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তে তা প্রকাশ পেয়েছে। প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে কাদের ইন্ধনে পরির্বতন করা হয়েছে ছাত্র সমাজ তা জানতে চায়। ছাত্রলীগের ‘গ্রুপ-উপ-গ্রুপ’ ভুলে গিয়ে এক কাতারে দাঁড়িয়ে দিয়াজ হত্যার বিচার নিশ্চিত করারও আহ্বান জানান তিনি।
ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাকিব হোসাইন বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এ মামলার বিচারকে বানচাল করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা দিয়াজের পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। দিয়াজ হত্যার বিচার না হলে সামনে আরও অনেক দিয়াজ হত্যা হবে। অকালে আরও মায়ের বুক খালি হবে।
চবি শাখা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সহ-সম্পাদক সৈয়দ ফরহাদুল হকের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বায়েজিদ সজল, জাহাঙ্গীর জীবন, হাসানসহ অনেকেই। চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে দিয়াজ সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দুই নম্বর গেইট সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসা থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ দিয়াজ আত্মহত্যা করেছে বলে বক্তব্য দিলেও শুরু থেকেই তার পরিবার অভিযোগ করে আসছিল, দিয়াজকে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ প্রথম দফা ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে। তারা আত্মহত্যা বলে প্রতিবেদন দিলে সেটি দিয়াজের পরিবার প্রত্যাখান করে। এরপর ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দে’র আদালতে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়।
আরও জানা যায়, গত ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দে’র আদালতে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করার আদালত সরাসরি মামলা গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের আদেশ দিয়ে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে সিআইডি দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নেয়। গত বছরের ১০ ডিসেম্বর কবর থেকে দিয়াজের মরদেহ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে ঢামেকের ফরেনসিক টিম। এতে দীর্ঘ ৭ মাস পরই এসেছে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনটি।
বিডি-প্রতিদিন/০১ আগস্ট, ২০১৭/মাহবুব