রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেফ্রোলজি বিভাগে কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস মেশিনের ২৫টির মধ্যে ২০টিই বিকল হয়ে পড়েছে। স্থানীয়ভাবে নষ্ট মেশিন ঠিক করার সুযোগ থাকলেও লকডাউনের কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মেশিন ঠিক করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া ঢাকায় চাহিদা পত্র দেয়ার পরেও চাহিদা অনুয়ায়ি যন্ত্রপাতি না আসার ফলে হাসপাতালের ডায়ালাইসিস বিভাগ নাজুক পরিস্থিতিতে পড়েছে। সেই সঙ্গে পানি ফিল্টার করার মেশিনটিও বিকল হওয়ার পথে। এ কারণে কিডনি রোগীদের চিকিৎসা সেবা মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।
জরুরি ভিত্তিতে নষ্ট মেশিন চালু করা না হলে অনেকেই বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।
রমেক হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে, রংপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলার দুই শতাধিক কিডনি রোগী এখানে চিকিৎসা নেন। তারা অগ্রীম টাকা জমা দিয়ে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। তাদের প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৪ দিন ডায়ালাইসিস করার জন্য আসতে হয়। এ ছাড়াও নতুন রোগী তো আছেই। কিন্তু ২৫টি ডায়ালাইসিস মেশিনের মধ্যে ২০টি বিকল হওয়ায় রোগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। ক্ষেত্র বিশেষে ২ থেকে ৩ দিন লাইন দিয়েও অনেকে সিরিয়াল পাচ্ছে না। ফলে কিডনি রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
এছাড়া পানি ফিল্টারিং করার মেশিন বেশিরভাগ সময় কাজ করছে না। পানির অভাবে ডায়ালাইসিস মেশিন কাজ করে না। ফিল্টার মেশিনে যেখানে ঘণ্টায় ১০ লিটার পানি সরবরাহ করার কথা সেখানে করা হচ্ছে ৪ থেকে ৫ লিটার। সব মিলিয়ে দেখা গেছে হাসপাতালের কিডনি ডায়ালাইসিস বিভাগ নাজুক অবস্থায় রয়েছে।
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার রোগী আসমা বেগমের স্বজন জানানেল, মেশিন নষ্ট হওয়ায় এখানে সিরিয়াল দিয়ে দুই-তিন দিন অপেক্ষা করতে হয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ফরিদুল ইসলাম সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, কয়েকটি ডায়ালাইসিস মেশিন নষ্ট হয়েছে। এবিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। লকডাউনের কারণে ঢাকা থেকে কোনো যন্ত্র আসছে না। এছাড়া কিছু কিছু মেশিন স্থানীয়ভাবে ঠিক করার সুযোগ থাকলেও দোকান পাট বন্ধ থাকার কারণে নষ্ট মেশিনগুলো ঠিক করা সম্ভব হচ্ছে না বলে তিনি জানান।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন