করোনার কারণে এমনিতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার বাড়ানো, ঝরে পড়া রোধ এবং শিশুদের অপুষ্টি দূর করতে চালু করা হয়েছিল দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং প্রকল্প। ওই প্রকল্প গত জুলাই মাস থেকে বন্ধ হয়ে গেছে।
তবে স্কুল ফিডিং প্রকল্প চালু না হলে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার পাশাপাশি অপুষ্টির শিকার হবেন এমনটাই শঙ্কা করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে , ১০১২ সাল থেকে দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং প্রকল্প চালু হয়। শিক্ষার্থীদের ৭৫ গ্রাম ওজনের এক প্যাকেট উচ্চ পুষ্টিমানসমৃদ্ধ বিস্কুট থেকে শিশুরা ৩৩৮ কিলোক্যালরি শক্তি পেত, যা তাদের প্রতিদিনের শক্তি চাহিদার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। কিন্তু সেই প্রকল্পও বন্ধ হয়ে গেছে। প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি কিংবা নতুন প্রকল্পের এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
রংপুরের চার উপজেলা গঙ্গাচড়া, বদরগঞ্জ, তারাগঞ্জ ও কাউনিয়ায় স্কুল ফিডিং প্রকল্পে ৫৬১ বিদ্যালয়ের মোট এক লাখ ১৪ হাজার ৩০৬ জন শিক্ষার্থী প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করত। কিন্তু জুলাই মাস থেকে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দরিদ্র্যপীড়িত এলাকার অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা হতাশ।
জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পের আওতায় দেশের দারিদ্র্যপীড়িত ৩৫টি জেলার প্রাথমিক স্কুলের প্রায় ৩৩ লাখ শিশুকে প্রতিদিন টিফিন হিসেবে বিস্কুট খেতে দেওয়া হতো। সরকার ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) সহায়তায় পরিচালিত এই প্রকল্পের মেয়াদ ৩০ জুন শেষ হয়। ফলে জুলাই মাস থেকে শিশুদের মধ্যে বিস্কুট বিতরণ বন্ধ হয়ে যায়।
গঙ্গাচড়া উপজেলার চর ইশোরকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শেণির শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান, বিনবিনা চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শেণির শিক্ষার্থী শিহাব মিয়া জানায়, প্রতিদিন খালি পেটে তারা স্কুলে যেতেন। দুপুরে স্কুল থেকে দেওয়া বিস্কুট খেয়ে ক্ষুধা মেটাতেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম চাঁন্দ বলেন, জুলাই মাস থেকে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের স্কুল ফিডিং দেওয়া হচ্ছে না। এতে ঝরে পড়ার পাশাপশি শিক্ষার্থীরা অপুষ্টির শিকার হবে। তিনি পুনরায় স্কুল ফিডিং চালু করার দাবি জানান।
রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শাহজাহান সিদ্দিকী বলেন, স্কুল ফিডিং প্রকল্প পুনরায় চালু হবে এমনটাই শোনা যাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই