৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৭:২৩

উত্তরার ‘ননী’ সুইটসে ভ্যাট গোয়েন্দার অভিযান; কাঁচাচালানের বই উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক

উত্তরার ‘ননী’ সুইটসে ভ্যাট গোয়েন্দার অভিযান; কাঁচাচালানের বই উদ্ধার

ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল রাজধানীর উত্তরাতে অবস্থিত ‘ননী’ সুইটস নামের মিস্টান্ন দোকানে অভিযান পরিচালনা করে ইএফডি মেশিনের পরিবর্তে কাঁচাচালান ইস্যু করে ভ্যাট ফাঁকির মহোৎসব দেখতে পেয়েছে। উত্তরা সেক্টর-১১ এর সোনারগাঁও জনপদ রোডে ‘ননী’ সুইটস এবং প্রতিষ্ঠানটির ফ্যাক্টরি তুরাগের ধউরে অবস্থিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্রেতা উত্তরার ননীর দোকানে গিয়ে মিষ্টি কিনলে মূসক-৬.৩ চাওয়া সত্ত্বেও তাকে কাঁচাচালান দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ইএফডি মেশিন বসানো থাকলেও ইএফডিতে চালান না কর্তন করে কাঁচাচালানে পণ্য বিক্রয় করায় ওই ক্রেতা ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন।

এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধানের পরে সংস্থার উপ-পরিচালক মুনাওয়ার মুরসালীন রবিবার বিকেলে ওই দোকানে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে গোয়েন্দার দল উক্ত ক্রেতার অভিযোগের সত্যতা পায়। অভিযানকালে প্রতিষ্ঠানটির উত্তরার শো-রুমে ক্রেতা দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। 

এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটিতে ইএফডি মেশিন থাকলেও কাঁচাচালানে মিস্টি বিক্রি করছে মর্মে গোয়েন্দা দল সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করে। এছাড়া প্রতিষ্ঠান থেকে ৪০টি অবৈধ কাঁচাচালানের বই জব্দ করা হয়, যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি অধিকাংশ ক্রেতাকে বিক্রয় রশিদ হিসেবে প্রদান করে থাকে। রশিদ যাচাই করে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানের কোন নিবন্ধন নম্বর ও ভ্যাট এর পরিমাণ এতে উল্লেখ নেই। আইন অনুসারে এগুলো ‘ভ্যাট চালান’ (মূসক-৬.৩) নয়।

প্রতিষ্ঠানটির টঙ্গীর ধউর এ অবস্থিত ফ্যাক্টরিতে গিয়েও একই ধরণের অনিয়ম পাওয়া যায়। সেখানেও মূসক-৬.৩ ছাড়া পণ্য সরবরাহ করা হয়েছে মর্মে অনুসন্ধানে দেখা যায়। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা শহরে ৫টি শো-রুম আছে এবং ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটের আওতায় কেন্দ্রিয়ভাবে নিবন্ধিত। 

উল্লেখ্য, আইন অনুসারে যে সব শোরুমে ইএফডি বসানো হয়েছে সেগুলোতে ক্রেতাকে আবশ্যিকভাবে ইএফডিতে বিক্রয় রশিদ প্রদান করা বাধ্যতামুলক। ইএফডিতে ভ্যাট চালান প্রদান করলে তা এনবিআরের সেন্ট্রাল সার্ভারে রেকর্ড হয়ে যায় এবং তা মাসিক ভ্যাট হিসাবের জন্য নির্ধারিত হয়। এই প্রক্রিয়ায় ক্রেতা কর্তৃক ভ্যাট ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নেই। অন্যদিকে, ইএফডিতে প্রদত্ত চালান এনবিআর কর্তৃক প্রতিমাসের পুরস্কার ঘোষণার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে কুপন হিসেবে বিবেচিত হয়। ননীতে ইএফডি বসানো স্বত্ত্বেও তা ব্যবহার না করা ক্রেতাদের সাথে প্রতারণার শামিল এবং ভ্যাট আইন অনুসারে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কার্যক্রম অনুসন্ধানের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক এর কর্পোরেট শাখা এবং ডাচ্ বাংলা ব্যাংক, উত্তরা সোনারগাঁও জনপথ রোড শাখায় হিসাব বিবরণী তলব করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শ্রীঘ্রই মামলা দায়েরসহ অন্যান্য আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। 

একইসাথে সংশ্লিষ্ট ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটকে এই মিস্টান্ন দোকানকে নিয়মিত মনিটরিং এর মাধ্যমে যথাযথ ভ্যাট আদায়ের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। যথাযথভাবে ইএফডিতে ভ্যাট চালান ইস্যুর বিষয়ে আরো নজরদারি করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর