উদ্বোধনের সাতদিন না যেতেই নারায়ণগঞ্জ তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু (নাসিম ওসমান সেতু) দখল নিয়েছে হকাররা। ৬১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতু গত ১০ অক্টোবর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শীতলক্ষ্যা নদীতে নির্মিত এই সেতু বীর মুক্তিযোদ্ধা একে এম নাসিম ওসমানের নামে নামকরণ করা হয়েছে।
এরই মধ্যে সেতুর দুই তীরে ৫৩টি ভাসমান দোকান চোখে পড়েছে। এছাড়া সেতুর মধ্যে উঠে পড়েছে ভাসমান হকার। সাথে উঠতি বয়সের ছেলেদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। প্রশাসন দ্রত এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
সরেজমিন দেখা যায়, বন্দরের ফরাজিকান্দা কয়লাঘাট ও শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পাড়ে সৈয়দপুরের অংশে সেতুর দক্ষিণ পাশের ধীর গতির যান চলাচলের লেনে প্রায় সাড়ে ১৫ ফুট জায়গা দখল করে ভাসমান তিনটি হালিমের দোকান বসানো হয়েছে। এর পাশেই বসেছে আচার, দেশি ফল, আখের রস, পপকর্ন, বাচ্চাদের খেলনা ও পাঁচটি চটপটির দোকান।
সেতুর মাঝে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে রীতিমতো মেলা বসেছে। অসংখ্য মোটরসাইকেল, ইজিবাইক-মিশুক, ব্যক্তিগত গাড়িসহ প্রায় ৫০টি যানবাহন থামিয়ে রাখা হয়েছে সেতুর দুই পাশের মূল লেনে। এতে দুই পাশের মূল লেনের প্রায় ৪০ ফুট জায়গাজুড়ে সেতুর অর্ধেক অংশে ঠিকমতো যান চলাচল করতে পারছে না। এছাড়া পুরো সেতুর দুইপাশ জুড়ে দেখা গেছে ভ্যান ও ২১টি ঝাল-মুড়ির দোকান। সেতুর মাঝ রাস্তায় দুটি ভ্যানে আচারের ও সরবতের দোকান বসেছে।
সেতুর পূর্ব প্রান্তে বন্দরের অংশে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর দায়িত্বে থাকা একজন আনসার সদস্য চেয়ারে বসে আছেন। তার ঠিক সামনেই দুটি ভ্যানে আখ, বাদাম-বুট বিক্রি করছেন দুজন।
সেতুতে ঘুরতে আসা হাজী রাজ মিয়া বলেন, শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় পুরো পরিবার নিয়ে সেতুতে ঘুরতে এসেছিলাম। কিন্তু ভাসমান দোকানের জন্য ঠিকমতো হাঁটতে পারছি না। তার উপর বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের ভয়।
মোজাম্মেল নামে আরেকজন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান সেতু হওয়াতে আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে। কিন্তু সেতুর উপর এসব ভাসমান দোকানের জন্য ঠিকমতো গাড়ি চালানো যায় না। তার উপর সেতুর মাঝে অনেক জায়গাজুড়ে বিভিন্ন যানবাহন পার্কিং করে রাখায় সেতু পার হতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে।
এ বিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, প্রতিদিন আমাদের টহল টিম কাজ করছে। সেতুতে ভাসমান দোকন বা কেউ যদি বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালায়, তাহলে প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে এমন কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
বিডি প্রতিদিন/এমআই