নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার এবং যেকোনো বিশৃঙ্খলা এড়াতে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে চার শতাধিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টের চেকপোস্ট গুলোতে তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনীরাও মহাসড়কে টহল দিবে।
গত ৭ নভেম্বর থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনগুলোতে ও যাত্রীদের তল্লাশি করছে পুলিশ। তল্লাশিকালে গত ৩ দিনে এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।
এদিকে, বিএনপি নেতাদের দাবি, আগামী ১০ ডিসেম্বরের বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করেই পুলিশ এসব তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি জানান, সরকার এখন বুঝতে পেরেছে তারা দেশটাকে কোন পর্যায়ে নিয়ে গেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে তারা। তাদের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ এখন আমাদের সমাবেশগুলোতে উপস্থিত হচ্ছে। সরকার তা বুঝতে পেরে সড়কে চেকপোস্ট ও নৌ-পথে টহল ব্যবস্থা জোরদার করার মাধ্যমে নিজের মসনদকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। আসলে তাদের উদ্দেশ্য হলো ১০ ডিসেম্বরে আমরা যেনো ঠিকমতো সমাবেশ করতে না পারি। আমাদের ঠেকাতে তারা এখন রাস্তায় পুলিশ নামিয়েছে, র্যাব নামিয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ অংশের জন্য ৩০০ জন পুলিশ সদস্যকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জের অংশের দুটি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো হবে। এর মধ্যে ২২০ জন পুলিশ সদস্যকে সাইনবোর্ড এলাকায় এবং বাকী ৮০ জন পুলিশ সদস্যদের মৌচাক এলাকায় রাখা হবে। আগামীকাল ভোর থেকে মহাসড়কে তারা দায়িত্ব পালন করা শুরু করবেন। আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করার জন্য চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছি। কেউ যাতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করতে না পারে সে বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ তৎপর রয়েছে। আমাদের রুটিনওয়ার্ক থেকেই আমরা এই কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভুলতা ক্যাম্পের টিআই ওমর ফারুক জানান, আমাদের পক্ষ থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা এলাকায় একটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। আপাতত চেকপোস্ট বাড়ানোর সম্ভাবনা নেই।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার শিমরাইল ক্যাম্পের টিআই একেএম শরফুদ্দীন জানান, আমরা গত দুদিন ধরেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছি। এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম জানান, আমাদের গত দুইদিনের মতো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনাঘাট টোলপ্লাজা এলাকায় একটি চেকপোস্ট থাকবে। তবে আগামীকাল চেকপোস্ট বাড়ানো হবে কিনা এ সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি। পাশাপাশি তারা নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে মহাসড়কে অবস্থান নিবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-সার্কেল) শেখ বিল্লাল হোসেন জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁওয়ের কাঁচপুর, মোঘরাপাড়া, মেঘনাঘাট টোলপ্লাজা এবং বন্দরের মদনপুর এলাকার চারটি পয়েন্টে শতাধিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পরবর্তী কোনো নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত এই তল্লাশি কার্যক্রম চলবে বলে জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত