রংপুর নগরীতে একহাতে পাতলা কম্বলে মোড়ানো এক মৃত নবজাতককে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আরজু বেগম নামে এক মা। সোমবার তাকে স্থানীয় লোকজন কৈলাশ রঞ্জন স্কুলের সামনে দেখতে পায় মৃত সন্তান কোলে।
পরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আসক ফাউন্ডেশনের রংপুর বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বাবু ও তার মানবাধিকার টিম এবং পুলিশের সহযোগিতায় মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের কাছ থেকে সন্তানকে উদ্ধার করা হয়। এরপর নবনির্বাচিত ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর লিটন পারভেজের ব্যবস্থাপনায় চারদিন পরে স্থানীয় কবরস্থানে ওই নবজাতককে দাফন করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানার ওসি হোসেন আলী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর বাড়ি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার মধুপুর এলাকায়। প্রায় ১৭ দিন আগে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি বাচ্চা জন্ম দেন। চারদিন পরে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরেন। কিন্তু তার সৎ বাবা বিষয়টি মেনে নেয়নি। ফের সে রংপুর নগরীতে চলে আসেন। শিশু সন্তানকে নিয়ে দিনে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। রাতে খোলা আকাশের নিচে থেকেছেন। তীব্র ঠাণ্ডায় তেমন পোশাক না থাকায় একপর্যায়ে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে।
শিশুটির চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে শুক্রবার সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান তিনি। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি তাকে জানানো হলেও তিনি বিশ্বাস করেননি। মৃত সন্তানকে বাঁচিয়ে তোলার আশায় নগরীর মাহিগঞ্জে এক কবিরাজের কাছে ছুটে যান। কিন্তু সেই কবিরাজ নিজেই অসুস্থ থাকায় তার দেখা পাননি। পরে মাহিগঞ্জ বাজার এলাকায় দিনভর মৃত সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন তিনি।
মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানার ওসি হোসেন আলী বলেন, মানসিক প্রতিবন্ধী মায়ের কাছ থেকে মৃত নবজাতককে উদ্ধার করে সোমবার স্থানীয় জণপ্রতিনিধি ও মানবাধিকার কর্মীদের মাধ্যমে লাশ দাফন করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই