বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দাম আর্থিক ক্ষতির মুখে চাষিরা

বিপর্যয়ে গলদা চাষ- ১

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দাম আর্থিক ক্ষতির মুখে চাষিরা

অব্যাহত দর পতনে হঠাৎ করেই বিপর্যয় নেমে এসেছে ‘সাদা সোনা’ খ্যাত চিংড়িশিল্পে। গেল ২০ বছরের মধ্যে এখন সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে গলদা চিংড়ি। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ঘেরমালিক ও চাষি।

সরেজমিন দেখা গেছে, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার স্থানীয় বাজারগুলোতে এখন পানির দামে বিক্রি হচ্ছে গলদা চিংড়ি। চিংড়ি চাষিরা জানিয়েছেন, জমির ব্যবস্থাপনা, পোনা ক্রয় ও খাবার খরচ দিয়ে প্রতি কেজি চিংড়ি উৎপাদনে ব্যয় হয় প্রায় সাড়ে ৮০০ টাকা। আর বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। অব্যাহত দর পতনে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন কয়েক লাখ প্রান্তিক চাষি।

জানা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় প্রায় ২ লাখ ৭৬ হাজার হেক্টর জমিতে প্রতিবছর গলদার চাষ হয়। তবে চাষিরা উৎপাদিত চিংড়ি সরাসরি কোম্পানিতে বিক্রি করতে পারেন না। স্থানীয় বাজারে চাষির বিক্রি করা চিংড়ি কয়েক দফা হাতবদলের পর তা পৌঁছায় কোম্পানিতে। আর বাজারগুলোতে থাকে মধ্যস্বত্বভোগী ও কোম্পানির শক্ত সিন্ডিকেট। চাষি ও কয়েকজন ফড়িয়া-মধ্যস্বত্বভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুলনার ডুমুরিয়া, আড়ংঘাটা, রূপসা, পাইকগাছা, দাকোপ উপজেলা ও বাগেরহাটের ফলতিতা বাজারসহ দক্ষিণাঞ্চলের চিংড়ির বড় মোকামের নিয়ন্ত্রণ মাছ কোম্পানির হাতে। তারা প্রতি সপ্তাহে যে দর নির্ধারণ করে, বাজারে সে অনুযায়ী কেনা-বেচা হয়। ডুমুরিয়ার মত্স্যচাষি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘চিংড়ির দাম নেই। বাজারে নিয়ে গেলে তিন ভাগের দুই ভাগ লস। গেল বছর মাঝারি গ্রেডের যে গলদা বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায়, এবার তার দাম  ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। সিন্ডিকেটের কারণে পাল্লা দিয়ে কমছে চিংড়ির বাজারদর।’

তবে এ ক্ষেত্রে গলদার অন্যতম ক্রেতা ইউরোপের বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যকে দুষলেন মত্স্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সাবেক উপ-পরিচালক আবদুর রাশেদ। তিনি বলেন, ইদানীং চিংড়ি কোম্পানিগুলো  ইউরোপের মূল ক্রেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারছে না। দুই পক্ষের মধ্যে ইউরোপে কিছু বাঙালি মধ্যস্বত্বভোগী এ ব্যবসা শুরু করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে    তারাই চিংড়ির দর নিয়ন্ত্রণ করেন।

সর্বশেষ খবর