শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

তেঁতুলিয়ায় যুবলীগ নেতার চোটপাটে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিপন্ন

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

তেঁতুলিয়ায় যুবলীগের ইউনিয়ন পর্যায়ের এক নেতার চোটপাটে বিপন্নবোধ করছে বেসরকারি খাতের ‘সিমপা বিদ্যুৎ কেন্দ্র’। আশরাফুল ইসলাম নামের এই নেতা হলেন শালবাহান ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। এই নেতা এবং কয়েকজন অনুসারীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করায় এই বিপদ। মামলার দুই আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এখন আসামিদের হুমকি-ধমকিতে সিমপার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বের হতে পারছেন না। কেন্দ্রে বিদেশি প্রকৌশলীরাও    বলছেন, তারা বিপন্নবোধ করছেন। সিমপার ম্যানেজার সাজ্জাদ হোসেন শুক্রবার দুপুরে বলেন, আসামিরা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ওতপেতে রয়েছে।

 

আশরাফুল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মোবাইল ফোনে তিনি জানান, তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। তিনি বলেন, সিমপা পাওয়ার প্ল্যান্টের মালিক প্যারাগন গ্রুপের সঙ্গে ২০১৮ সালে নির্মাণসামগ্রী সরবরাহের জন্য তার চুক্তি হয়েছিল। তিনি ৪১ লাখ টাকার ইট, পাথর ও বালি সরবরাহ করেন। শর্ত ছিল প্রতি সপ্তাহে তাকে বিল দেওয়া হবে। অথচ ৯ মাস ধরে কোম্পানির কাছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। ওই টাকা চাওয়ায় তারা তাকে চাঁদাবাজির মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। তবে এ ব্যাপারে তেঁতুলিয়া থানার ওসি জহুরুল ইসলাম জানান, চাঁদাবাজির অভিযোগটি সত্য। তাই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেফতার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

চাঁদাবাজির মামলায় অভিযোগ করা হয়, আশরাফুল দীর্ঘদিন ধরে ইউপি ট্যাক্সের নাম করে মাঝিপাড়ায় প্যারাগন গ্রুপের মালিকানাধীন এ্যকুয়া বিল্ডার্সের কাছ থেকে চাঁদা তুলছিলেন। প্যারাগন গ্রুপের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি তাদের উৎপাদিত ১০ দশমিক ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তেঁতুলিয়ায় সরবরাহ করছে। যুবলীগ নেতা আশরাফুল ১৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রের সিকিউরিটি গার্ডদের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে, ওই রাতেই ডাহুক ব্রিজের সামনে প্যারাগনের মুরগি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ট্রাকের গতিরোধ করেন আশরাফুল ও তার ১০/১২ জন অনুসারী। তারা চাকু দেখিয়ে ট্রাকের চালক ও সঙ্গে নিরাপত্তা প্রহরীকে ট্রাক থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। পরে সবার মোবাইল ফোন নিয়ে নেন। ট্রাক চালকের পকেট থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় ৪২ হাজার টাকা। পরদিন ১৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সিকিউরিটি অফিসার শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বাদী অভিযোগ করেন, যুবলীগ নেতার হুমকিতে কোম্পানির লোকজন নিরাপত্তাহীনতাবোধ করছেন। বিদেশি প্রকৌশলীরা কেন্দ্রে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। মামলার দুই আসামি মাঝিপাড়া এলাকার আলী হোসেন ও প্রামাণিকপাড়া গ্রামের শাহ আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর