বুধবার, ১ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

পরকীয়ায় উধাও স্ত্রীকে ফিরে পেতে শিশু অপহরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাশেদুল ইসলাম ঢাকার আশুলিয়ার জিরানী বাজারে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। স্ত্রী নুরজাহান চাকরি করতেন গার্মেন্টসে। স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে সাত বছরের শিশু সন্তানকে ফেলে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান। এতে শিশু সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েন রাশেদ। তার ধারণা, স্ত্রীর সঙ্গে একই গার্মেন্টসে কাজ করা মিরা আক্তার সব জানেন। এ কারণে চেষ্টা করেও স্ত্রীর সন্ধান না পেয়ে মিরার দেড় বছরের শিশুকে অপহরণ করেন তিনি। পরে অপহৃত ওই শিশুর অবস্থান জানতে পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর হয়ে ওঠে। কিন্তু আসামি অজ্ঞাত হওয়ায় অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধার করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। অন্যদিকে স্ত্রীর সন্ধান জানতে না পেরে অপহরণের এক সপ্তাহ পর ফোন করে শিশুটিকে ফিরিয়ে দিতে চাঁদা দাবি করেন রাশেদ। ২০ হাজার টাকা পেয়েও লাপাত্তা হয়ে যান তিনি। অপহরণের দুই মাস পর শিশুটিকে উদ্ধার করে র‌্যাব। একই সঙ্গে রাশেদ ও তার ফুফু রোকসানাকে গ্রেফতার করা হয়। 

গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) ডিআইজি মোজাম্মেল হক।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ৩১ মার্চ সকাল ১০টায় ঢাকার আশুলিয়ার শিমুলিয়ার টেঙ্গুরী এলাকা থেকে দেড় বছরের শিশু অঁাঁখি অজ্ঞাত যুবক কর্তৃক অপহৃত হয়। শিশুটি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী থানার পাইক্কা গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে। সাদ্দাম হোসেন পেশায় রাজমিস্ত্রি ও তার স্ত্রী মিরা আক্তার পোশাক শ্রমিক। তারা আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের টেঙ্গুরী এলাকায় জনৈক আলী হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। ঘটনার পরদিন ১ এপ্রিল শিশুটির দাদা বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি শিশু অপহরণ মামলা করেন। র‌্যাব-৪ অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেফতারে পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে। র‌্যাব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে, অপহরণকারী রংপুরে আত্মগোপনে রয়েছেন। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর একটি দল র‌্যাব-১৩ এর সহযোগিতায় সোমবার রাতে রংপুর শহরে অভিযান চালিয়ে রাশেদুল ইসলামকে (৩০) গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে রাশেদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার রতনপুর এলাকার একটি বাসা থেকে রোকসানার হেফাজত থেকে দেড় বছরের অপহৃত শিশু আঁখিকে উদ্ধার করা হয়।

ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, প্রকৃতপক্ষে অপহৃত শিশুটির বাবা-মা রাশেদের স্ত্রীর ঠিকানা জানত না। যে কারণে তারা সঠিক ঠিকানাও দিতে পারেননি। রাশেদ স্ত্রীর সন্ধান না পেয়ে লোভের বশবর্তী হয়ে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। বিকাশ নম্বরে ২০ হাজার টাকা পাঠানোও হয়। কিন্তু রাশেদ মুক্তিপণের টাকা না উঠিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর