মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে বাড়ছে পশুর কামড়ে আক্রান্ত রোগী

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে বিভিন্ন পশু-প্রাণীর কামড়ে আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। পশুর কামড়ে জলাতঙ্ক রোগ হচ্ছে। তবে এর মধ্যে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হওয়া রোগী বেশি। পরিসংখ্যানে এটি অর্ধেকের চেয়েও বেশি। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিসের (বিআইটিআইডি) রোগীর সংখ্যা পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানা যায়।  চিকিৎসকরা বলছেন, অপচিকিৎসা, টোটকা না নিয়ে কুকুর কামড়ানো রোগীরা যথাসময়ে টিকা নিলে মৃত্যু এড়ানো সম্ভব। ক্ষতস্থানটি ১৫ মিনিট ধরে পানি ও সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে নিলে ৭৫-৮০ ভাগ জলাতঙ্কের জীবাণু চলে যায়। এ ব্যাপারে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। জানা যায়, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পশু আক্রমণকার রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৬০৪ জন। এর মধ্যে কুকুরের কামড়ানোর রোগী ২ হাজার ৭৬০ জন এবং অন্যান্য প্রাণীর কামড়ে আক্রান্ত হয় ১ হাজার ৮৪৪ জন। অন্যদিকে, বিআইটিআইডিতে গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয় ২ হাজার ৭৭ জন। এর মধ্যে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২২১ জন। বাকি ৯১৬ জন আক্রান্ত হন অন্যান্য প্রাণীর দ্বারা সংক্রমিত হয়ে। তাছাড়া, গত দুই বছরে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে চলতি বছর মারা যায় দুজন।  বিআইটিআইডির মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘জলাতঙ্ক র?্যাবিস ভাইরাসজনিত একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। কুকুর রোগটির প্রধান বাহক।

 তবে বিড়াল, খেঁকশিয়াল, বেজি, বানর, বাদুড়ের কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমেও জলাতঙ্ক হতে পারে। যদি যথাসময়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হয় এবং টিকা নেওয়া যায়, তাহলে মৃত্যু প্রতিরোধ সম্ভব। তবে কুকুর-বিড়াল কামড়ালে ভ্যাক্সিনেশনের কোনো বিকল্প নেই। জলাতঙ্ক থেকে সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।

জানা যায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পথকুকুরগুলোর টিকাদান কর্মসূচি পালন করছে। চট্টগ্রামে জলাতঙ্ক রোগী কম হলেও কুকুরে কামড়ানোর টিকা নেওয়ার সংখ্যা বেশি। জেনারেল হাসপাতালে বিনামূল্যে অ্যান্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন (এআরভি) এবং র‌্যাবিস ইমোনোগ্লুবিন (আরআইজি) সরবরাহ করে আসছে।

চিকিৎসক সূত্রে জানা যায়, জলাতঙ্ক একটি হাইড্রোফোবিয়া কিংবা পাগলা রোগ। এ রোগে আক্রান্ত রোগী লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর এক থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই মারা যান। কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে না। তবে জলাতঙ্কের বিরুদ্ধে কার্যকর টিকা আছে। যা রোগের লক্ষণ প্রকাশের আগে শরীরে প্রয়োগ করতে পারলে মৃত্যু এড়ানো সম্ভব।  

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর