অতীতের ধারাবাহিকতায় এবারও পুণ্যভূমি সিলেট থেকে নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করছে আওয়ামী লীগ। আজ হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত এবং জনসভার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা ৩টায় সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠে আয়োজিত প্রথম নির্বাচনি জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সোয়া ১১টায় সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সেখান থেকে হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করবেন। পরে সিলেট সার্কিট হাউসে অবস্থান করবেন। এরপর বেলা ৩টার দিকে তিনি জনসভায় ভাষণ দেবেন।
শেখ হাসিনার সফর ও আওয়ামী লীগের প্রথম নির্বাচনি জনসভা ঘিরে সিলেটে উজ্জীবিত আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। দলীয় সভানেত্রীর আগমন ঘিরে সিলেটজুড়ে বইছে উৎসবের আমেজ। তোরণ, ব্যানার-ফেস্টুনে সেজেছে সিলেট নগরী। জনসভায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটাতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কাজ করছেন নেতা-কর্মীরা। শেখ হাসিনার জনসভাকে জনসমুদ্রে রূপ দিতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। গতকাল জনসভাস্থল পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।
আলিয়া মাদরাসা মাঠ পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় সিলেটবাসীর প্রতি আন্তরিক। তাঁর কাছে কিছু চাইতে হয় না, চাওয়ার আগেই তিনি দিয়ে থাকেন। বুধবার আলিয়া মাদরাসার মাঠে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা জনসমুদ্রে রূপ নেবে। এ জনসভার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হবে এবারও সিলেটের সব কয়টি আসন সিলেটবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেবেন।
গতকাল বিকালে সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, জনসভার জন্য বিশাল মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মীর উপস্থিতিতে চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ। সমাবেশস্থলের চারপাশে বাঁশ দিয়ে শক্ত বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। নেতা-কর্মীদের সমাবেশস্থলে ঢোকার জন্য পৃথক লেন তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে সিলেট নগরীকে সাজানো হয়েছে ভিন্ন সাজে। নগরীর প্রতিটি ব্যস্ততম সড়কে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হয়েছে। বিশেষ করে নগরীর চৌহাট্টা, রিকাবিবাজার, লামাবাজার, দরগাহ গেট, আম্বরখানা ও বিমানবন্দর সড়ক সংস্কার করা হয়েছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে আলোকসজ্জার পাশাপাশি শোভা পাচ্ছে সারি সারি ফুলের গাছ। সব মিলিয়ে উৎসবের নগরীতে রূপ নিয়েছে সিলেট।
এর আগে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সিলেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সে সময়ও হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত এবং আলিয়া মাদরাসা মাঠে সমাবেশ করেছিলেন তিনি। এবারও তাঁর সফরসূচিতে এসব কর্মসূচি রয়েছে।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সিলেটবাসী। ইতোমধ্যে জনসভার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সিলেটবাসীর প্রতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সব সময় আন্তরিক। জনসভায় তিনি সিলেটের উন্নয়নের কথা বলবেন। তাছাড়া নির্বাচন নৌকায় ভোট চাওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেবেন।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রীর জনসভার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। জননেত্রীকে স্বাগত জানাতে গত কয়েকদিন ধরে নিরলসভাবে নেতা-কর্মীরা কাজ করেছেন। কেন্দ্রের নির্দেশনা মোতাবেক জনসভায় ১০ লাখ মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কাজ করা হয়েছে। বুধবারের জনসভা সিলেটের ইতিহাসে স্মরণকালের বৃহৎ সমাবেশ হবে বলে আমরা মনে করছি।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমরা নির্বাচনের আচরণবিধির প্রতি খুবই যত্নবান। যে কারণে প্রধানমন্ত্রীর সিলেট সফর নিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন হয় এমন কোনো কাজ করছি না। তবে জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আলিয়া মাদরাসা মাঠে ১০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটাতে আমরা কাজ করেছি। আশা করছি সমাবেশ জনসমুদ্রেই পরিণত হবে।
