দি হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশন লিমিটেড বাংলাদেশ (এইচএসবিসি) দেশের দ্বিতীয় সাসটেইনেবিলিটি লিংকড লোন সম্পাদন করলো বাংলাদেশ স্টীল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (বিএসআরএম) জন্য। প্রায় ২৫০ কোটি টাকার (২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) এই সাসটেইনেবল লোন দীর্ঘ মেয়াদে বিএসআরএম-এর জ্বালানি শক্তি ব্যবহারে দক্ষতা অর্জনের সঙ্গে সংযুক্ত।
নির্দিষ্ট কিছু পূর্ব নির্ধারিত সূচক বা লক্ষ্যমাত্রা (এসপিটি) অর্জনের বিপরীতে এই সাসটেইনেবিলিটি লিংকড লোন, ঋণ গ্রহীতার সাসটেইনেবল উদ্যোগ সমূহকে তরান্বিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। উদাহরনসরূপ, ঋণ গ্রহীতা পূর্ব নির্ধারিত সূচক বা লক্ষ্যমাত্রা (এসপিটি) অর্জনে সক্ষম হলে ঋণ-সূদের পরিমাণ চুক্তি মোতাবেক হ্রাস পাবে। এই ধরনের সাসটেইনেবিলিটি লিংকড লোনের ফলে ঋণ গ্রহীতা চুক্তি মেয়াদে তার প্রতিষ্ঠানের সাসটেইনেবিলিটি প্রোফাইল উন্নয়নে উৎসাহিত হবে।
চুক্তি সম্পাদন অনুষ্ঠানটির ভার্চুয়াল সেশনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি, মোহাম্মদ আহমেদ আলী, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম; আলীহোসাইন আকবরালী, চেয়ারম্যান বিএসআরএম, জনাথান ড্রিউ, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইনভারনমেন্টাল, সোশ্যাল ও কর্পোরেট গভারনেন্স (ইএসজি) সল্যিউসন্স এইচএসবিসি, মো. মাহবুবউর রহমান, সিইও, এইচএসবিসি বাংলাদেশ, কেভিন গ্রীন, কান্ট্রি হেড অফ হোলসেল ব্যাংকিং এইচএসবিসি বাংলাদেশ ও অন্যান্য আমন্ত্রিত কর্মকর্তা ও সুধিজন।
প্রধান অতিথি মোহাম্মদ আহমেদ আলী বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যাংকের লক্ষ্য হলো ব্যাংকিং ক্ষেত্রে টেকসই অবকাঠামো প্রণয়ন করা এবং সেটাকে মূল ব্যাংকিং ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গ্রীন ব্যাংকিং ও সিএসআর কার্যকর করার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা। খুব শিগগিরই ব্যাংকসমূহের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে অত্যাধুনিক টেকসই অর্থনৈতিক অবকাঠামো প্রণয়ন করতে চলেছি। ইতিপূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংক, গ্রীন প্রোডাক্টসমূহের অর্থনৈতিক খাতগুলোকে সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে সৌরশক্তি, বায়ো-গ্যাস ও এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ইত্যাদিতে ২০০ কোটি টাকা নিজস্ব তহবিল থেকে বিনিয়োগ করেছে।’
মো. মাহবুবউর রহমান বলেন, ‘সম্প্রতি এইচএসবিসি ক্লিন এনার্জি ও লো-কার্বন প্রযুক্তি নির্ভর অর্থায়ন ও বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে কার্বন নিঃস্বরনকে শূন্যে নামিয়ে আনার কঠিন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে-যা একটি শক্তিশালী ও টেকসই অর্থনীতি গড়ায় সহায়ক হবে। বিশ্বব্যাপী আমাদের পরিব্যাপ্তি এবং সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা বিভিন্ন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানকে স্বল্প কার্বন অর্থনীতির দিকে নিয়ে যাচ্ছি। বিএসআরএম-এর সাথেও একত্রিত হয়ে সাসটেইনেবিলিটি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভূমিকা রাখতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
আলীহোসাইন আকবরালী, চেয়ারম্যান বিএসআরএম বলেন, ‘এইচএসবিসি-র মতো আমরাও সবসময় আমাদের শিল্পাঙ্গনে ও সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়নে সচেষ্ট। আমরা এইচএসবিসি-র সাথে এই যুগোপযোগী ও উদ্ভাবনী কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পেরে আনন্দিত।’
বিএসআরএম সক্রিয়ভাবে কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি ও বিবিধ ক্ষেত্রে গর্বের সাথে কাজ করে চলেছে। শীর্ষস্থানীয় এই স্টীল ম্যানুফ্যাকচারার যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও ব্রাজিল থেকে ১০০% রিসাইকেল্ড স্ক্র্যাপ আমদানি করে থাকে। এছাড়াও অন্যান্য উদ্যোগসমূহের মধ্যে রয়েছে পরিবেশ রক্ষায় শিল্পবর্জ্য হ্রাসকরণ কার্যক্রম, বন সংরক্ষণ কার্যক্রম, অক্ষম বা ডিসেবেল্ড তরুণদের প্রশিক্ষণ প্রদান, জিনিয়াস স্কলারশীপ ও ওয়াটার কনজারভেশন প্রকল্পসমূহ।
এর আগে, এবছরই এইচএসবিসি বাংলাদেশের সর্বপ্রথম সাসটেইনেবিলিটি লিংকড লোন প্রদান করে যার আওতায় স্কয়ার গ্রুপকে ১০০০ কোটি টাকার (১১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) সাসটেইনেবল লোন দীর্ঘ মেয়াদে রিনিউয়েবল এনার্জি বা নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে প্রদান করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই
