শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

রক্ত-বর্জ্যে পরিবেশ দূষণ

খোলা জায়গায় ময়নাতদন্ত

জামালপুর প্রতিনিধি

রক্ত-বর্জ্যে পরিবেশ দূষণ

জামালপুরে নানা অব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে চলছে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত কার্যক্রম। হাসপাতাল এলাকার বাইরে জঙ্গলাকীর্ণ এলাকায় রয়েছে মর্গ ভবন। পরিত্যক্ত ওই ভবনে ময়নাতদন্তের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় খোলা আকাশের নিচে সেকেলে পদ্ধতিতে কাঁটাছেঁড়া হচ্ছে মরদেহের। উন্মুক্ত জায়গায় ময়নাতদন্তের কারণে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ। উপযুক্ত পরিবেশের অভাব আর জটিলতার কারণে ময়নাতদন্তের দায়িত্ব পালনে আগ্রহী নন বেশিরভাগ চিকিৎসক। ২৫০ শয্যার জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে মর্গের দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। শহরের বনপাড়া এলাকায় ফৌতি গোরস্থানে তিন যুগ আগে তৈরি ভবনে চলছে ময়নাতদন্তের কাজ। ইতোমধ্যে ওই ভবনটি পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। ঘন জঙ্গলে ভরে উঠেছে ভবনের চারপাশ। ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় মৃতদেহ কাঁটাছেঁড়া করা হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় মৃতদেহের রক্ত ও দূষিত বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। বিশেষ করে মৃতদেহের কাপড়, চুল, দেহ মুড়িয়ে রাখা চাটাই, ব্যাগসহ নানা জিনিস ফেলে রাখা হয় মর্গের পাশে। তাছাড়া আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় সনাতন পদ্ধতিতে কাঁটাছেঁড়া করা হয় লাশ। ফলে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ভুল কিংবা প্রভাবিত হওয়ার শঙ্কা থাকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মর্গটি আবাসিক এলাকায় হওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে তাদের বসবাস করা কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ছে। উন্মুক্তভাবে মৃতদেহ আনা-নেওয়া এবং খোলা জায়গায় কাঁটাছেঁড়া করার কারণে প্রায়ই শিশুরা তা দেখে ভয় পাচ্ছে। মর্গের চারপাশ জঙ্গলে ভরে যাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে ভৌতিক পরিবেশ। এ কারণে সন্ধ্যার পর এই পথ দিয়ে মানুষের চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। মর্গটিকে অন্যত্র স্থানান্তরের দাবি করেন তারা। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ফেরদৌস হাসান জানান, মরদেহের নির্ভুল ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য ম্যাগনিফাইং গ্লাস, স্কালপেলসহ আধুনিক যন্ত্রপাতির প্রয়োজন-যার কোনোটিই আমাদের নেই। এছাড়া জামালপুর মর্গে ময়নাতদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চেয়ার-টেবিল, বিদ্যুৎ, পানি কিংবা বর্ষার সময় দাঁড়ানোর শেড পর্যন্ত নেই। নানা সমস্যার মধ্যে দিয়েই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। জামালপুর সিভিল সার্জন ডা. গৌতম রায় বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে মর্গটি দূরে হওয়ায় এবং পেশার বাইরে আইনি দায়িত্ব পালন করার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয় ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের। মেডিকেল কলেজের কাজ সম্পন্ন হলে এ সব সমস্যা কেটে যাবে।’

সর্বশেষ খবর