নারায়ণগঞ্জে থান কাপড় ব্যবসায় ধস নেমেছে। এতে এক ধরনের অনিশ্চয়তায় দিন পার করছেন ব্যবসায়ীরা। অনেক ব্যবসায়ী কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছেন না। বিপাকে পড়েছেন শত শত শ্রমিক। বাংলাদেশ হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. বদিউজ্জামান বদু বলেন, আগে শহরের রেলওয়ে মার্কেটে প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা বেচাকেনা হতো। কিন্তু বর্তমানে এমন দিনও যায় যেখানে কোনো কোনো গদিতে ১০০ টাকাও বিক্রি হয় না। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে একেবারেই বেচাকেনা নেই। অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছেন। আয় যদি না হয় তাহলে কীভাবে ব্যবসা করবে? আগের সরকার এই দেশ থেকে সমস্ত অর্থ নিয়ে গেছে। যার কারণে অর্থনৈতিক অবস্থা চাপে পড়েছে। এই চাপের প্রভাব পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। শহরের রেলওয়ে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলেন, বিপুল অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেও এখন ব্যাপক লোকসানে পড়েছেন তারা। কোনো কোনো ব্যবসায়ী দিনে ১০০ টাকাও বেচাকেনা করতে পারছেন না। অথচ এক সময় প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বেচাকেনা হতো। কয়েক বছর ধরেই এ পরিস্থিতি চলছে। তবে সম্প্রতি তা প্রকট আকার ধারণ করেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, বিভিন্ন এলাকার গার্মেন্ট মালিকরা এখানকার মার্কেট থেকে থান কাপড় সংগ্রহ করে গেঞ্জি, টি-শার্ট তৈরি করেন। ওইসব পণ্য সৌদি আরব, দুবাই, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে থাকেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায়ও পণ্য সরবরাহ করা হয়। ব্যবসায়ীরা আরও জানান, বর্তমানে থান কাপড় মার্কেটে ক্রেতার আগমন একেবারেই কমে গেছে। আগে ব্যবসায়ীরা যেখানে মাসে ১০ থেকে ২০ টন মাল বিক্রি করতেন এখন ৩ টন মালও বিক্রি করতে পারেন না। এতে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা বিপাকে পড়েছেন। নারায়ণগঞ্জ শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকার রেলওয়ে সুপার মার্কেটের মহিবুল্লাহ ট্রেডার্সের মালিক মো. লুৎফর রহমান লিটন বলেন, এখন এ ব্যবসার পিক সিজন। আগে এই সময়ে অনেক বেচাকেনা হতো। প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা বিক্রি হতো। কিন্তু এই বছর সিজন চলছে সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। ব্যবসায়ী শাকিল মাহমুদ বলেন, অনেক ফ্যাক্টরি বন্ধ। বেচাকেনা একেবারেই কমে গেছে। মেসার্স তাকদীর ট্রেডার্সের মালিক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বর্তমান অবস্থার কারণে কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না। কেউ কেউ দেউলিয়া হয়ে গেছে।