গোপালগঞ্জে এবার আমন সৌসুমে সবচেয়ে বেশি ফলন হয়েছে নতুন জাত ব্রি ধান-১০৩। স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রচলিত জাতের চেয়ে অনেক কম। এর খড়ের উৎপাদনও ভালো। এ কারণে প্রতি বছর গোপালগঞ্জে ব্রি ধান-১০৩ আবাদ বাড়ছে। আমন মৌসুমে বেশি ফলন দিতে সক্ষম চিকন এ জাতের ধান চাষাবাদ সম্প্রসারিত হলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও চিফ সাইন্টিফিক অফিসার ড. আমিনা খাতুন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্রি উদ্ভবিত উচ্চফলনশীল এবং হাইব্রিড ধান নিয়ে গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট ও নড়াইল জেলায় কাজ করছি। চলতি আমন মৌসুমে তিন জেলায় ব্রি ধান ১০৩-এর প্রদর্শনী পট করা হয়। সদর উপজেলার ঘোনাপাড়ার কৃষক আরজ আলীর জমির ধান কেটে পরিমাপ করে দেখা গেছে প্রতি বিঘায় (৩৩ শতাংশ) এ ধান ২২ মণ ফলন হয়েছে। বাগেরহাট ও নড়াইল জেলায়ও এ ধানের আশানুরূপ ফলন মিলেছে। আমন মৌসুমে দেশের ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থার বিপ্লব ঘটিয়ে চলছে ব্রি ধান-১০৩। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক সহকারী আবদুল্লাহ আল মোমিন জানান, এ জাতটি রোপা আমন মৌসুমে বৃষ্টিনির্ভর চাষাবাদ উপযোগী। বীজ বপনের উপযুক্ত সময় ১৫ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত। সারের মাত্রা অন্যান্য উফশী জাতের মতোই। এ ধানের জাতে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে। তাই ধান উৎপাদনে খরচ সাশ্রয় হয়।
সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজ কুমার রায় বলেন, গত বছর তার ইউনিয়নে ১০ হেক্টর জমিতে এ ধান আবাদ হয়। চলতি বছর হয়েছে ২৭ হেক্টরে। জেলার সব ব্লকেই এ ধানের আবাদ ব্যাপক আকারে সম্প্রসারিত হয়েছে আমি জানতে পেরেছি। কৃষকের কাছে এ ধান জনপ্রিয় জাতে পরিণত হয়েছে। ব্রি বীজ দিলে আগামী বছর আমরা এ ধানের আবাদ আরও বেশি করতে পারব। এ জাতে দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।