কাউন্সিলের প্রায় ১৩ মাস পর সাতক্ষীরা জেলা আ'লীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রবিবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ প্রশাসক মুনসুর আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম যৌথভাবে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত ও অনুমোদিত এ কমিটি ঘোষণা করেন।
পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে নয় জনকে রাখা হয়েছে। তারা হলেন ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি, আবু নাছিম ময়না, মহিদুল হক, একে ফজলুল হক, আবুল খায়ের, এসএম হায়দার, ডা. মোখলেছুর রহমান, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি ও মফজুলার রহমান খোকন।
যুগ্ম সম্পাদক পদে বিগত কমিটির অধ্যাপক আবু আহমেদ, প্রয়ত নেতা সাবেক সাংসদ খালেদ বখত ছাকির পুত্র ফিরোজ কামাল শুভ্র ও শেখ সাইদ উদ্দিনের নাম বহাল রাখা হয়েছে।
তিনজন সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে সাবেক কমিটির ফিরোজ আহমেদ ছাড়া এবার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু ও শ্যামনগর উপজেলার অধ্যক্ষ জাফরুল আলম বাবুর নাম স্থান পেয়েছে।
এছাড়া সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ কোর্টের পিপি ওসমান গনিকে আইন বিষয়ক সম্পাদক, শ্রমিক লীগ নেতা শেখ হারুন-উর-রশিদকে দপ্তর সম্পাদক, আসাদুল হককে কোষাধ্যক্ষ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা কলারোয়া উপজেলার সরদার মুজিবকে কৃষি বিষয়ক সম্পাদক, হায়দার আলী তোতাকে তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, এপিপি অ্যাড. আজহারুল ইসলাম ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক, কলারোয়া পৌর সভার মেয়র নির্বাচনের বিদ্রোহী প্রার্থী আরাফাত হোসেনকে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, শেখ নুরুল হককে প্রচার সম্পাদক, শহীদুল ইসলাম বন ও পরিবেশ সম্পাদক, স ম গোলাম মোস্তফা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, মনোয়ারা ফারুক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এনামুল হক বিশ্বাস মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক, শেখ আব্দুল কাদের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, শফিউল আজম লেলিন শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক, আব্দুল গনি শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক, সাইফুল করিম সাবুকে শ্রম বিষয়ক সম্পাদক, অনিত মুখার্জি সাংস্কৃতিক সম্পাদক, ডা. আজিজুর রহমান স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক, জেএম ফাত্তাহ উপ-দপ্তর সম্পাদক ও তালা উপজেলার খলিল নগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বাবলুকে উপ-প্রচার সম্পাদক করা হয়েছে।
উল্লিখিত পদ ছাড়াও পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ৩৪ জনকে নির্বাহী সদস্য করা হয়েছে।
তবে উক্ত কমিটিতে অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মীদের নাম স্থান না পাওয়ায় দলীয় নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এদিকে সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌর মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে ভোট করার কারনে যাদেরকে বহিস্কার করা হয়েছিল সেই সমস্ত নেতাদের নাম জেলা কমিটিতে স্থান পাওয়ায় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টু ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সম্প্রতি কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের বিপক্ষে আরাফাত হোসেন অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে ভোট করার কারনে কলারোয়া পৌরসভায় খুব অল্প ভোটের ব্যাবধানে বিএনপির প্রার্থীর কাছে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর ভরাডুবি হয়। সেই বিদ্রোহী প্রার্থী আরাফাত হোসেনকে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে। এভাবে দলের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া অনেক নেতা-কর্মীদের পদ-পদবি দেওয়া হয়েছে, যেটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এদিকে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে অবস্থান নেওয়া সাবেক তুখড় ছাত্র নেতা জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান, সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিঠু, যুবলীগ নেতা কাজী আক্তারসহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়র শেখ মুজিবুর রহমানের সমর্থক অনেকের নাম জেলা কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
২০১৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনে কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক এমপি জেলা পরিষদ প্রশাসক মুনসুর আহমেদকে সভাপতি ও নজরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন। এর দীর্ঘ প্রায় ১৩ মাস পর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হলো।
বিডি-প্রতিদিন/১০ এপ্রিল ২০১৬/ এস আহমেদ