বগুড়ায় মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিলেন এক মাদক সম্রাজ্ঞী। সংবাদ সম্মেলন করে মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ঘোষণা দিলেন মাদক সম্রাজ্ঞী সেলিনা বেগম। একইসঙ্গে মাদকের ভয়াবহ থাবায় জড়িয়ে পড়া বিপথগামী তরুণ-যুবকদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসারও আহবান জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়ার শেরপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।
লিখিত বক্তৃতায় উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের সেলিনা বেগম বলেন, একসময় মাদক ব্যবসাকে ঘৃণা করতাম। কিন্তু আমার স্বামী মজিবর রহমান মজনু নিজে মাদক সেবনের পাশাপাশি ব্যবসায়ে জড়িয়ে যান। এই কারণে বিভিন্ন সময়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা স্বামী মজনুকে ধরতে অভিযানও চালিয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ে গ্রেফতার এড়াতে সক্ষম হন তিনি। তবে মাদক ব্যবসায়ী স্বামীর সহযোগিতা করার অভিযোগে আমাকে একাধিকবার গ্রেফতার করেছে। শুধুমাত্র সন্তান ও স্বামীকে রক্ষা করতে গিয়ে নিশ্চুপ থেকেছি। মাদক সম্রাজ্ঞী হিসেবে গ্রেফতার হওয়াকেও মেনে নিয়েছি।
আবেগ তাড়িত কণ্ঠে সেলিনা বেগম বলেন, বিগত সময়ে অনেক জেল-জুলুম মেনে নিলেও বর্তমানে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছি। ইতিমধ্যে মাদক ব্যবসায়ী স্বামী মজিবর রহমান মজনুর সঙ্গেও সব সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। তাকে মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিতে বলার অপরাধে আমাকে তালাক দিয়েছে। এমনকি আমার সাবেক স্বামী মজনু দ্বিতীয় বিয়ে করে সেই স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা বসতবাড়িতে সংসার করছেন। আমিও নিজের ভাগ্যকে মেনে নিয়ে তিন মেয়ে সন্তানকে নিয়ে পৃথক বসতবাড়িতে বসবাস করছি। সেই সঙ্গে মাদক ব্যবসার কুফল বুঝতে পেরেছি। তাই বাকি জীবনে আর এই পথে পা বাড়াবো না। স্বাভাবিকভাবে জীবন-যাপন করতে চাই। একইসঙ্গে মাদকের ভয়াবহ ছোবলে আক্রান্ত বিপথগামী তরুণ-যুবকদেরও ফিরে আসার আহবান জানাচ্ছি।
সেলিনা বেগম বলেন, এই মাদকের কারণে আমার সাজানো সংসার ভেঙে গেল। মাদকাসক্ত স্বামী তালাক দিল। দ্বিতীয় বিয়ে করলো। তাই আসুন আমরা মাদক বিক্রি ও সেবনকে না বলি। আর আমার মত কোন নারীর যেন এই অবস্থা না হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সেলিনার তিন মেয়ে মায়া বেগম, মিশু খাতুন ও মৃত্তিকা খাতুন উপস্থিত ছিলেন।