ঝালকাঠিতে এক স্কুল ছাত্রীকে মারধর করে চোখ নষ্ট করার ঘটনায় আদালতে ওই ছাত্রীর মা বাদি হয়ে ৫ বখাটের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাহের আহমেদ বিষয়টি আমলে নিয়ে মঙ্গলবার সদর থানার ওসিকে এজাহার হিসাবে গ্রহণ করতে আদেশ দিয়েছেন। তবে মামলার বিষয়টি সাংবাদিকরা আজ বুধবার জানতে পারেন।
এদিকে, ছাত্রীটি জাতীয় চক্ষু ইনষ্টিটিউট থেকে টাকার অভাবে চিকিৎসা না নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছে। বর্তমানে তার লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
মামলার বিবরণ ও নথি সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাভারাম চন্দ্রপুর ইউনিয়নের শেওড়াপারা গ্রামের মো. খলিল হাওলাদারের কণ্যা শেওড়াকাঠি বালিকা বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী লামিয়া আক্তার (১২) কে স্থানীয় ৫ বখাটে উত্যক্ত করে আসছিল। এ ঘটনায় ছাত্রীটির বাবা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ইউপি সদস্য মো. চুন্ন শরিফের কাছে বিচার দাবি করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই গ্রামের মমিন হাওলাদার, নয়ন মাঝি, জুয়েল মাঝি, মো. আলআমিন ও সজিব মিয়া গত ১৭ মে রাতে ছাত্রীটির বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় মেয়েটির বাবাকে মারধর করে বখাটেরা লামিয়াকে টেনে হিচড়ে ঘরের বাহিরে নিয়ে আসে। তাকে মারধরের এক পর্যায়ে বখাটে মমিন হাওলাদার চেপে ধরে। এ ফাঁকে নয়ন মাঝি ছাত্রীটির চোখে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। এতে ছাত্রীটির বাম চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। পরে ছাত্রীটির স্বজনরা জাতীয় চক্ষু ইনষ্টিটিউটে দীর্ঘ দিন চিকিৎসা করান। কিন্তু অর্থের অভাবে লামিয়ার চিকিৎসা শেষ না করেই বাড়ি নিয়ে আসতে বাধ্য হয়।
এ বিষয়ে ছাত্রীটির মা ও মামলার বাদি রাবেয়া বেগম বলেন, এ ঘটনার পর থেকে আমার মেয়ের চোখে সূর্যের আলো সহ্য করতে পারে না। যে কারনে সে ঠিকমত বিদ্যালয়ে যেতে না পারায় তার লেখা পড়া বন্ধ হবার উপক্রম হয়ে পড়েছে। পড়ার সময় ঝাপসা দেখে এবং তার চোখ দিয়েও পানি ঝরতে থাকে। ইতিমধ্যেই মেয়ের চিকিৎসায় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়ে গেছে। ডাক্তার বলেছে তার চোখে অস্ত্রপচার করে লেন্স বসাতে লক্ষাধিক টাকা খরচ হবে। এদিকে বখাটেরা মামলা করার পর থেকে লামিয়ার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছে বলে জানায়।
এ বিষয়ে আসামীদের মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
বিডি-প্রতিদিন/০২ আগস্ট, ২০১৭/মাহবুব