শিরোনাম
১৬ অক্টোবর, ২০১৯ ১৭:৩৯

রংপুরে পুলিশ-এলাকাবাসী সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, পুলিশ-ইউপি চেয়ারম্যানসহ আহত ২৫

রংপুর প্রতিনিধি

রংপুরে পুলিশ-এলাকাবাসী সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, পুলিশ-ইউপি চেয়ারম্যানসহ আহত ২৫

রংপুরের পীরগঞ্জের ভেন্ডাবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির হাজতখানায় পশু ব্যবসায়ী সামসুল হক (৫৫) নামের এক আসামির মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ ও এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ফাঁড়ি এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২৩ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোঁড়ে। সংঘর্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজ, ভিক্ষুকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে।

বুধবার সকালে মুত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী থানা ঘেরাও করলে এই সংঘর্ষ বাঁধে।

মৃতের পরিবারের দাবি, তাকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে গ্রেফতার করে ২ লাখ টাকার চাঁদা দাবি পূরণ না করায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করে গামছা দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই আমিনুল ইসলাম পশু ব্যবসায়ী মিঠাপুকুর উপজেলার শান্তিপুর গ্রামের পশু ব্যবসায়ী সামসুল ইসলামকে বড়দরগা থেকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করে।

বুধবার সকাল ৯টায় ফাঁড়ির হাজতখানার গ্রিলের সঙ্গে গামাছা ও পাঞ্জাবি পেচিয়ে আত্মহত্যার খবর দেয় পুলিশ।  সামসুলের পরিবারের অভিযোগ গ্রেফতারের পর আমিনুল ইসলাম তাদের কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় পুলিশ ফাঁড়ির হাজখানায় পিটিয়ে হত্যা করে গ্রিলের সঙ্গে গামছা ও পাঞ্জাবি পেঁচিয়ে রাখে তারা।

বুধবার সকালে সামসুলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে সামসুল হত্যার বিচার দাবি করে। পুলিশ এলাকাবাসীকে নিবৃত করার চেষ্টা করলে তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশের সঙ্গে এলাকাবাসীর তুমুল সংঘর্ষ বাঁধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেধড়ক পিটুনি ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে এলাকাবাসী ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এসময় রাবার বুলেটে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রাবউল হাসান, পুলিশের ডি সার্কেলের এএসপি হাফিজ উদ্দিন, ভিক্ষুক, চকবরখোদা গ্রামের রউফ তালুকদারের ছেলে তরিকুল ইসলাম (২৫), কলোনি গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে আব্দুর কাদের পাকুরিয়া গ্রামের মৃত্যু তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে আশিকুল ইসলাম, নওশাদ মিয়ার ছেলে রাজুসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার রাতে বড়দরগায় পুলিশ তাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে গ্রেফতার করলে এলাকাবাসী তাতে বাধা দেয়। এসময় এলাকাবাসী পুলিশকে জানায় তিনি মাদক ব্যবসায়ী নন, একজন পশু ব্যবসায়ী। তারপরও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। 

এ ব্যাপারে  ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আমিনুল ইসলাম জানান, সকাল ৯ টার দিকেও আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। কিছুক্ষণ পরই গিয়ে দেখি থানা হাজতের গ্রিলের সঙ্গে গামছা ও পাঞ্জাবি গলায় পেচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তাকে কোনও নির্যাতন করা হয়নি।  তার কাছে কোন চাঁদাও চাওয়া হয়নি। তিনি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

এ ব্যাপারে রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন আছেন। সার্কেল এএসপি এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। আমিও ঘটনাস্থলে আছি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর