১৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০১:৪৭

ফাঁস দিয়ে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা, শরীরে নেই কোনও চিহ্ন!

লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি

ফাঁস দিয়ে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা, শরীরে নেই কোনও চিহ্ন!

নিহত রোজিনা আক্তার

লামায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেছে নিহতের মা খালেদা বেগম। তবে নিহতের শরীরে ফাঁসের কোনও চিহ্ন নেই বলে জানিয়েছেন লামা সরকারি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিউর রহমান মজুমদার। 

তিনি আরও জানান, হাসপাতালে আনার ১৫ মিনিট পর ওই স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুকালীন সময়ে নিহতের মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে দেখা যায়। তার শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না।

নিহত রোজিনা আক্তার (১৬) লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড পূর্ব শিলেরতুয়া এলাকার আহাম্মদ হোসেন প্রকাশ বদি আলম ও খালেদা বেগমের ৪র্থ মেয়ে। সে পার্শ্ববর্তী আলীকদম উপজেলার চৈক্ষ্যং উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী।

মৃত্যু সংবাদ পাওয়া মাত্র লামা থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক সালাউদ্দিন রাশেদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে নিহতের প্রাথমিক সুরতহাল করে।

এছাড়া, স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা শুনামাত্র লামা হাসপাতাল পরিদর্শন করেন লামা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রেজওয়ানুল ইসলাম ও লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা। পরে তারা রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

নিহতের মা খালেদা বেগম (৪৫) বলেন, বিকালে বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যেতে দেয়নি বলে রাগে তার মেয়ে রোজিনা আক্তার সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটের দিয়ে ফাঁস নেয়।

তিনি আরও বলেন, প্রথমে তার ছোট মেয়ে খুকি আক্তার (১৪) তাকে ওড়না দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে থাকতে দেখে চিৎকার দেয়। চিৎকার শুনে আমার ছেলে ফেরদৌস মিয়ার বউ মুক্তা বেগমসহ তাকে ফাঁসি থেকে নামায়। তারপর আমার ছেলে ও স্বামীসহ আমরা তাকে সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে লামা হাসপাতালে নিয়ে আসি। হাসপাতালে আনার ১৫ মিনিট পর তার মৃত্যু হয়।

গলায় ফাঁসের কোনও চিহ্ন নেই কেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান। 

এদিকে, রোজিনা আক্তারের মৃত্যুর পর থেকে তার বাবা আহাম্মদ হোসেনকে আর হাসপাতাল দেখা যাচ্ছে না বলে জানান তার ছেলে ফেরদৌস মিয়া (২২)। 

তিনি আরও বলেন, আমার বোনের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী আলীকদম উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের আবাসিক এলাকার মো. ইসমাইল (২০) নামে এক ছেলের বিয়ের কথাবার্তা চলছে। ওই ছেলের সঙ্গে রোজিনা আক্তারের প্রায় ১ বছর যাবৎ প্রেম-ভালবাসা চলছিল। ছেলের মা ও বড় ভাই মাসখানেক আগে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে। তবে মেয়ের প্রেম ও বিয়ের বিষয়টি গোপন করে তার মা খালেদা বেগম।

রোজিনার মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। লাশ বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর