মাদারীপুরের রাজৈরে করোনাভাইরাসে প্রথম আক্রান্ত হওয়া শিশুর বাবা সুমন করোনাকে জয় করে বাড়ি ফেরার ৭ দিন পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশু ও তার মা করোনাকে জয় করে বাড়ি ফিরেছেন।
জানা গেছে, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কোদালিয়া বাজিতপুর গ্রামের সুমন মুন্সী ঢাকার কদমতলীতে একটি ফলের দোকানের কর্মচারী ছিল। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এ শ্রমিক ঢাকা থেকে নিজ বাড়ি আসলে করোনার লক্ষণ দেখা দেয় এবং এ খবর জানাজানি হলে রাজৈর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিক, তার স্ত্রী ও তিন বছরের শিশু সন্তানকে হাসপাতালের নির্দিষ্ট কক্ষে কোয়ারেন্টাইনে রেখে ৯ এপ্রিল সুমন মুন্সীর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠায়।
দু'দিন পরে রিপোর্ট আসে শ্রমিক সুমনের শরীরে করোনাভাইরাস পজেটিভ। পরে ১১ এপ্রিল ওই শ্রমিকের শিশু সন্তান ও স্ত্রীর নমুনা ঢাকায় পাঠায়। শিশুটির পজেটিভ ও ওই স্ত্রীর নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। দীর্ঘদিন হাসাপাতালের আইসোলেশন থেকে চিকিৎসা নেয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২৫ এপ্রিল নতুন করে তিন জনেরই নমুনা ঢাকা পাঠায়।
এবারের করোনা টেস্ট রিপোর্টে সুমন ও তার সন্তানের নেগেটিভ ও স্ত্রীর পজেটিভ আসে। শিশুটির বাবা সুমনকে ৩ মে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দেয়। শিশুটি করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়েও ৭ দিন হাসপাতালে মায়ের কাছে থাকে। বুধবার বিকেলে শিশুটির মার করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসলে বৃহস্পতিবার ছাড়পত্র দেয়া হয়।
রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল জানান, পর পর দুইবার নেগেটিভ রির্পোট আসায় সুমন ও তার শিশু সন্তানকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেয়া হলেও তিন বছরের শিশু ইসমাইল মাকে ছাড়া থাকতে পারবে না, একারণে শিশুটি করোনায় আক্রান্ত মা বৈশাখী বেগমের কাছেই থেকে যায়।
পুনরায় নমুনা ঢাকায় পাঠানোর পর বুধবার বিকেলে বৈশাখীর করোনা রির্পোট নেগেটিভ আসায় সমস্ত বিধি মেনে মা ও ছেলেকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়।
রাজৈরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২ নারীসহ ৭জনের মধ্যে ৪ জনই করোনা জয় করে বাড়ি ফিরে গেল।
এদিকে, একই উপজেলার একই এলাকার রাজিবকে রাজৈর হাসপাতালে আইসোলেশন কক্ষের সংকট থাকায় মাদারীপুর হাসপাতালে রাজিব (২২) চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। সেও আজ করোনা মুক্ত হয়ে বাড়ি গেল।
করোনায় জয়ী হওয়া সুমন জানান, হাসপাতালের ডাক্তাররা আমার এবং আমার স্ত্রী ও সন্তানের জন্য খাবার, ওষুধ, পথ্য পোশাক- এমনকি শিশু সন্তানকে শান্ত রাখতে খেলনা পর্যন্ত কিনে দিয়েছেন। আজ আমার স্ত্রী ও শিশু সন্তান সুস্থ হয়ে বাড়ি যাচ্ছে। আমি আনন্দিত। তবে কাজ বন্ধ থাকায় আয়ও বন্ধ রয়েছে।
রাজৈর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহানা নাসরিন জানায়, করোনায় আক্রান্ত একই পরিবরের তিনজনই করোনা মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। তাদের আরও ১৪ দিন হোম কোয়ারেনটাইনে থাকতে হবে । তাদের এ ১৪ দিনের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন