করোনাভাইরাস কয়েকটি প্রাণের উৎসবকে বঞ্চিত করলেও মজার ‘ঘুড়ি ওড়ানো’ থেকে বঞ্চিত করতে পারেনি। বরং লকডাউনে শিশু ও যুবকদের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সের কর্মহীন মানুষও এই ঘুড়ি উড়ানোয় মেতে উঠছে। এদিকে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঘুড়ি কারিগররা। বিকেল হলেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিভিন্ন এলাকায় ঘুড়ি উড়তে শুরু হয়, এ যেন নীল আকাশে ঘুড়ির মেলা। আকাশের দিকে তাকালে দেখা যায় বিভিন্ন রং এর ঘুড়ি। এমন চিত্র এখন দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকা, পাড়া মহল্লার মাঠে অথবা বাড়ির ছাদে।
কেউ নিজ এলাকার ফাকা জায়গায়, কেউ আবার নিজ বাড়ির ছাঁদ থেকে ঘুড়ি উড়াচ্ছেন। আবার কারো সাথে ঘুড়ি কাটাকাটির প্রতিযোগিতা চলতে থাকে। আর এই ঘুড়ির চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় এবং লকডাউনে ঠিকমত উপকরণ না মেলায় ঘুড়ি তৈরিতেও কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে কারিগরদের।
দিনাজপুরে সপ্তাহখানিক আগে শুরু হয় ঘুড়ি ওড়ানো। তখন একটি ঘুড়ি বিক্রি হতো ৫ টাকায়। পরে তা বেড়ে ৭ টাকা এবং বর্তমানে একটি ঘুড়ি বিক্রি হচ্ছে ১০টাকায়।
দিনাজপুর শহরের পশ্চিম বালুয়াডাঙ্গা হঠাৎপাড়া এলাকার নিজ বাড়িতে ঘুড়ি তৈরি করে ব্যস্ত সময় পার করছেন (কাঞ্চন ব্রীজ সংলগ্ন) রং বেরং নামের দোকানের স্বত্তাধিকারি মো. কাশেম। পেশায় তিনি একজন চিত্রশিল্পী হলেও বর্তমান প্রেক্ষাপটে তার তেমন কাজ না থাকায় নিজ বাড়িতেই ঘুড়ি তৈরি করছেন। এসময় মো. কাশেম জানান, ঘুড়ির চাহিদা এত বেশি যে, আমি ঘুড়ি তৈরি করে সামাল দিতে পারছি না। কেউ ৫টা, কেউ ১০টা করে ঘুড়ি চাইছে। চাহিদা বাড়ায় ঘুড়ি তৈরিতে আমার সাথে যোগ দিয়েছে স্ত্রী-সন্তানও।
তিনি বলেন, পাতলা কাগজের সাথে চিকন কঞ্চি লাগিয়ে সাধারণত ঘুড়ি তৈরি করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন উপাদান ও নকশার ঘুড়ি রয়েছে। বর্তমানে সব কিছুর দাম বাড়ায় একটি ঘুড়ি বিক্রি করছি ১০ টাকায়। তিনি জানান, একটি ঘুড়ি তৈরি করতে তার সময় লাগে প্রায় ৪ থেকে ৫ মিনিট।
এদিকে, রাজবাড়ীর এলাকায় আকরাম হোসেন বাবুল, বাসুনিয়াপট্টিস্থ চকবাজার এলাকার গোপাল জানান, ঘুড়ি ওড়ানোটা নেশা না হলেও বর্তমান করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে বেকার না ঘুরে বাড়ীর শিশুরাসহ ঘুড়ি উড়িয়ে সময় কাটাচ্ছি। বিকেলটা অনেক আনন্দে কেটে যাচ্ছে। পাশাপাশি আকাশে অজানা কারো সাথে ঘুড়ি নিয়ে লড়াই করছি। এটি এক অন্যরকম অনুভূতি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল