ঠাকুরগাঁওয়ে পীরগঞ্জ উপজেলার ৬নং পীরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুব আলমের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
ইউপি সদস্যদের ভুল-ভাল বুঝিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা হাতিয়ে নেওয়া এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের জমিটিও নিজের পরিবারের নামে করে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
ইউপি সদস্যরা চেয়াম্যানের এই কুকীর্তি বুঝতে পেরে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় প্রশাসন জানান, অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চেয়ারম্যান মাহাবুব আলমের কর্মকাণ্ডে ইউপি পরিষদের কার্যালয় ছেড়ে হাট-বাজারের বারান্দায় বসে সময় পার করছেন ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ৬নং পীরগঞ্জ ইউনিয়নের ইউপি সদস্যরা।
ইউপি সদস্যদের অভিযোগ নির্বাচনের পর ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা ক্রয়ের কথা বলে সরকারের এলজিএসপি প্রকল্পের অর্থ উত্তোলনে সদস্যদের কাছ থেকে কৌশলে সাক্ষর নেন চেয়ারম্যান। পরে জমি ক্রয় করে টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও চল্লিশ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের অর্থে নির্মাণ করা হয় ভবনটি।
দীর্ঘদিন ভবনটি ব্যবহারের পর তারা জানতে পারেন পরিষদের যে জমিটি ক্রয় করা হয় তা চেয়ারম্যানের পরিবারের সদস্যদের নামে। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সদস্যরা। চেয়ারম্যানের সাথে সৃষ্টি হয় দূরত্ব। এ নিয়ে কথা বলায় অনেক সদস্যের সম্মানী ভাতা বন্ধ করে দেয়া হয়।
আর এ সুযোগে সদস্যদের বাদ দিয়েই পরিষদের সব প্রকল্পের কাজ একাই করেন চেয়ারম্যান। আর পরিচালনা ও বণ্টন করা হয় তার নিজস্বকর্মীদের দিয়ে। এ অবস্থায় উপায় না পেয়ে সদস্যরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
ইউপি সদস্য দীনেশ চন্দ্র, আমিরুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, ইনুস আলী, লুৎফর রহমানসহ ১১ জন লিখিত অভিযোগ দেন।
লিখিত অভিযোগে তারা বলেন, চেয়ারম্যান গায়ের জোরে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। তার নিজস্বকর্মীদের দিয়ে সব প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে। যার কারণে আমরা ইউনিয়ন পরিষদ ছেড়ে বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলেও তাদের জন্য কিছুই করতে পারছি না। আমরা সরকারের কাছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করছি।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম জানান, যে অভিযোগটি করা হয়েছে তা কোনো বিষয়ই না। আমার পরিবারের লোকজনই এ জমি দিয়েছে, তা ইউনিয়ন পরিষদের নামেই রয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম জানান, অভিযোগটি আমরা পেয়েছি। তা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হবে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে যে ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার তা নেয়া হবে।
স্বাধীনতার পর থেকে পীরগঞ্জ পৌর শহরের নিজস্ব ভবনেই চলছিল ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনের পর ৬নং পীরগঞ্জ ইউনিয়নের ভাকুড়া গ্রামে একটি ভাড়া বাসায় বছর খানেক কার্যক্রম চলে। পরে ক্রয়কৃত ৩৩ শতক জমির উপর ২০১৭ সালে নতুন ভবনে কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম