চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের পূর্বটিকরা গ্রামের ৬০ বছর বয়সী নারী রোকেয়া বেগমকে গলা কেটে হত্যা ঘটনার মূলহোতোসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাসুয়াটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ, সেইসাথে হত্যার রহস্যও উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে। মূলত জমিজমার দখল নিতেই এই হত্যাকাণ্ডে বলে স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃত মূলহোতা রোকেয়ার সৎ জামাই সেকান্দার আলী।
এই কিলিং মিশনে ৫০ হাজার টাকায় ৪ জন কিলারকে ভাড়া করা হয়। এদের মধ্যে বড় সাহেব ও বারোতেরো নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে জেলা পুলিশ অফিসে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান পুলিশ সুপার এইচএম আব্দুর রাকিব।
এর আগে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন সেকান্দার আলী। গত বছরের একই দিন তার শশুর শুকুরদিকেও হত্যা করে গলায় রশি দিয়ে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়েছিল জামাই সেকান্দার আলী। পুলিশ সুপার এইচএম আব্দুর রাকিব সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, গত ১৩ জুন সকালে সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের পূর্বটিকরা গ্রামের নিজ ঘর থেকে রোকেয়া বেগমের গলাকাটা ও বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করে সদর মডেল থানা পুলিশ।
এ ঘটনার পর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইশবাল হোছাইনের নেতৃত্বে ক্লু-লেস এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নামেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি অপারেশন মিন্টু রহমান। তারা গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রোকেয়ার সৎ মেয়ের জামাই পশ্চিম টিকরা গ্রামের মৃত লুথু মন্ডলের ছেলে সেকান্দার আলীকে গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে আটক করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রোকেয়াকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন তিনি।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সেকান্দার জানায়, তারা সম্পত্তির লোভে অপর চার জামাই সাড়ে ১২ হাজার করে টাকা চাঁদা উঠিয়ে ৪ জন কিলারকে ভাড়া করা হয় এবং কিলারদের সাথে সেও হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কিলার গ্রুপের বড়সাহেব ও বারোতেরো নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।
সে আরও স্বীকার করে, সে গত বছরের ঠিক একই দিন অর্থাৎ ১২ জুন রাতে শশুর শুকুরদিকে গলা টিপে হত্যার পর মরহেদ রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালানো হয়েছিল। এদিকে পুলিশ আরও জানায়, সেই ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছিল। সে মামলার তদন্ত শুরু করে মামলাটি হত্যা মামরায় রূপান্তর করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন