করোনা পরিস্থিতে দীর্ঘ ২২৫ দিন বন্ধ থাকার পর রবিবার খুলেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঘেরা সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। প্রথম দিনই দর্শনার্থীদের দেখা পেয়েছে বন্যপ্রাণীরা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পার্ক পরিচলানায় নেয়া হয়েছিল নানা পদক্ষেপ। শিশু-কিশোরসহ সব বয়সীদের রবিবার সকাল থেকেই ভিড় করেন। করোনাকালীন বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় ঘরে থেকে হাফিয়ে উঠা বিনোদন প্রেমী দর্শনার্থীরা প্রথম দিনই বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতির সান্নিধ্য পাওয়ার আশায় পার্কে প্রবেশ করেন। আবারও দর্শনার্থীদের আগমন উপলক্ষ্যে নানাভাবে সাজানো হয়েছিল পার্ক ও আশেপাাশের এলাকা। তবে বিকেলে বৃষ্টির কারণে পার্কে আগত দর্শনার্থীদের দুর্ভোগে পরতে হয়।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানান, করোনার কারণে পার্কটি বন্ধ থাকায় অপরূপ রূপে সেজেছে পার্কের জীব বৈচিত্র। প্রজনন করেছে জেব্রা, অয়েল বিস্ট, জিরাপ, গয়ালসহ নানা প্রজাতির প্রাণি। এগুলো দেখে এক অন্যরকম সাফারি পার্ক উপভোগ করছেন ঘুরতে আসা নানা বয়সী দর্শনার্থীরা।
পার্কে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা সকাল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পার্কে প্রবেশ করেছেন। সারাদিন ঘুরে বেড়িয়েছেন। দীর্ঘদিন পর একটা বিনোদনের ব্যবস্থা হয়েছে। শহরের পরিবেশ থেকে দূরে অন্যরকম একটা প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘুরতে পেরেছেন তারা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তবিবুর রহমান জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে গত ২০ মার্চ হতে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে পার্কটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত দেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে পার্কটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২২৫ দিন বন্ধ থাকার পর রবিবার থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শনার্থীদের জন্য পার্কটি আবার খুলে দেওয়া হয়।
তিনি জানান, দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। শনিবারের মধ্যেই পার্কের কর্মীরা ধোঁয়ামোছার কাজ সম্পন্ন করেছে। পার্কের আশেপাশের এলাকার দোকানপাটের ব্যবসায়ীরাও প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন দর্শনার্থীদের জন্য। সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন পর আবারো সরব হয়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক এলাকা।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান আরো জানান, করোনাকালীন পার্ক বন্ধ থাকায় পার্ক ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক ক্ষতি হলেও, জীব বৈচিত্রের পরিবর্তন ও বন্যপ্রাণীর অস্বাভাবিক প্রজননে ক্ষতির হিসেবে লাভবান হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পার্ক পরিচালনায় নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ২০ মার্চ হতে পার্কে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
৩ হাজার ১১০ একর জায়গায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে যাত্রা শুরু করে। বাঘ, সিংহ, হাতি, মায়া হরিণ, ভালুক, গয়াল, কুমিরসহ পার্কে আছে বিচিত্র সাড়ে ৪ হাজার পশুপাখি।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার